Natural Disaster

নদী গর্ভে তলিয়েছে পার্কের বড় অংশই

কয়েক বছর আগে সন্দেশখালি ১ ব্লকের ৪ নম্বর ন্যাজাট গ্রামে বিদ্যাধরী নদীর পাশে গড়ে তোলা হয়েছিল পার্কটি।

Advertisement

নির্মল বসু

সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ০৩:১২
Share:

সলিলসমাধি: তলিয়ে গিয়েছে পার্কের বড় অংশই। নিজস্ব চিত্র

মাথায় ছাতা দেওয়া বসার জায়গা। কিন্তু এখন বসলে পা ডুবে যায়। আর ঢেঁকি পুরোটাই জলে। যেখানে ‘স্লাইড’ রয়েছে, সেখানেও নদীর জল। দোলনার নীচেও ছলাৎ ছল শব্দে ছুঁয়ে যাচ্ছে বিদ্যাধরীর জল।

Advertisement

এখন দেখলে বোঝার উপায় নেই, মাসখানেক আগেও এখানে ছিল সাজানো গোছানো শিশুউদ্যান। আমপানের ঝড়ে পাঁচিল ভেঙেছে সন্দেশখালির ন্যাজাটের ওই পার্কটির। পাড় ভেঙে বিদ্যাধরী ঢুকে এসেছে পার্কের মধ্যে।

কয়েক বছর আগে সন্দেশখালি ১ ব্লকের ৪ নম্বর ন্যাজাট গ্রামে বিদ্যাধরী নদীর পাশে গড়ে তোলা হয়েছিল পার্কটি। সাংসদ কোটার টাকায় তৈরি পার্কের চারদিক পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। বসার জন্য কংক্রিটের জায়গা তৈরি করা হয়েছিল। খেজুর, নারকেল, কাঁটাবাবলা, কৃষ্ণচুড়া, ইউক্যালিপটাস, দেবদারু, সোনাঝুরি, রাধাচুড়া-সহ নানান ধরনের গাছ লাগানো হয়েছিল। শিশুদের খেলার জন্য বসানো হয়েছিল স্লাইড, দোলনা, মাঙ্কি বার।

Advertisement

বিদ্যাধরীর ভাঙন আটকাতে পার্কের পাশে লাগানো হয়েছিল কেওড়া, বানের মতো গাছ। নদী-পাড়ের সুন্দর ওই পার্কে সময় কাটাতে সকাল ও সন্ধ্যায় ভিড় জমত। আলোর ব্যবস্থাও ছিল। পার্কের পাশেই জেটিঘাট। বিদ্যাধরী নদীর অন্য পারে গাজিখালি। ফেরি পারাপারের সময়ে নৌকো আসতে দেরি হলে যাত্রীদের অনেকেই পার্কে বিশ্রাম নিতেন।

আমপানের তাণ্ডবে সে সবই লন্ডভন্ড। পার্কের চারধারে লাগানো গাছগুলি ভেঙে পড়ে। উপড়ে যায় বিদ্যুতের খুঁটি। নদীর ধারের পাঁচিল ভেঙে বসার জায়গা তলিয়ে যায়। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে পাড় ভেঙে পার্কের বেশ কিছুটা অংশ গ্রাস করেছে নদী। ন্যাজাট ২ পঞ্চায়েতের সদস্য অরিন্দম জানা বলেন, “সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় পার্কটি তৈরি হওয়ায় এখানকার বাসিন্দারা খানিকটা বেড়ানোর জায়গা পেয়েছিলেন। শুধু শিশুরাই নয়, সকাল-সন্ধ্যায় অনেক মানুষ পার্কে শরীর চর্চা করতেন। আমপানে তো অনেক কিছুই গিয়েছে। পার্কটাও গেল।” স্থানীয় বাসিন্দা কমলা মণ্ডল, রাধাপদ সর্দার বলেন, “এখানে বিনোদন বলতে তো ওই পার্কটুকুই ছিল। আমরা চাই পার্কটিকে ফের আগের মতো করে তৈরি করে দেওয়া হোক।” সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, “সুন্দরবন লাগোয়া সন্দেশখালির মতো প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কথা ভেবে সাংসদ কোটার টাকায় পার্কটি হয়েছিল। পার্কটির বড় অংশ নদীর জলে তলিয়ে যাওয়ায় আমরা মর্মাহত। যে ভাবেই হোক না কেন, আমরা পার্কটি ফের গড়ে তুলব। ইতিমধ্যেই প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন