দত্তপুকুরের ৩০০ বছরেরও প্রাচীন পুজো। —নিজস্ব চিত্র
রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই দুর্গামায়ের। উত্তর চব্বিশ পরগনার দত্তপুকুরে আজও স্বমহিমায় হয়ে আসছে বুড়িমার পুজো। হিন্দু-মুসলমান দু’ সম্প্রদায়ের মানুষই মেতে ওঠেন এই পুজোয়। ৩০০ বছরেরও (আনুমানিক ১৭১০ সাল) এই পুজো দেখতে ছুটে আসেন ভিন রাজ্যের মানুষও।
দত্তপুকুর রেল স্টেশনে নেমে থানা পার হতেই আকাশচুম্বী মন্দির চোখে পড়ে যায় দূর থেকেই। ৮৫ বছরের প্রবীণ ভিগুরাম রায় ও রহমত আলি জানালেন, জন্মাষ্টমীতে মায়ের কাঠামো পুজোর মধ্য দিয়েই এলাকায় শারদোৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। মহাষ্টমীর পনেরো দিন আগে শুরু হয়েছে বোধন। এখানে বুড়িমা রূপে পূজিত হন মা। মায়ের দশভুজার পরিবর্তে এখানে দু-হাত। বাকি আট হাত শাড়ির ভাঁজে লুকানো থাকে।
মায়ের বাহন ঘোড়া, পিছনের অংশ সিংহরূপী। অষ্টমীতে কলা, আঁখ ও চালকুমড়ো বলি হয়। কৃষ্ণচন্দ্র দাসের পুকুর থেকে কয়েক হাজার মানুষ দণ্ডি কেটে মানসিক পুজো শেষ করে অষ্টমী তিথির শেষে। নবমী ও দশমী পুজোর নির্দিষ্ট তিথি নক্ষত্র মেনে সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে মায়ের বিসর্জনের পালা শুরু। প্রচলিত আছে, গ্রামের এক মুসলমান ব্যক্তি মায়ের দর্শন পেয়েছিলেন বলে আজও বিসর্জনের পথে কারিগরের বাড়ির সামনে এবং দুর্গা মন্দিরের সামনে বুড়িমাকে সাত পাক ঘোরানোর মধ্য দিয়ে এক সম্প্রীতির ধারা আজও অক্ষুণ্ণ রয়েছে। সুঁটি নদীতে মায়ের বিসর্জন না-হওয়া পর্যন্ত এলাকার অন্য কোনও প্রতিমা বিসর্জন হয় না।