— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে চার বছরের শিশুকন্যার মৃত্যুর ঘটনায় প্রকাশ্যে এল ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট। জানা গেল, শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে ওই শিশুকে। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই নিহত শিশুর দাদু প্রণব ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাঁকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হবে।
শিশুখুনের ঘটনায় ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পেয়েছে পুলিশ। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে ওই শিশুকে। খুনের পর ধারালো কোনও বস্তু দিয়ে শরীরে একাধিক আঘাতও করা হয়েছে। অন্য দিকে, নিহত শিশুর দাদু প্রণব বর্তমানে শারীরিক ভাবে অসুস্থ। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন তিনি। শ্বাসকষ্টও রয়েছে তাঁর। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মঙ্গলবার তাঁকে বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হবে।
নিহতের পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, প্রণব বেশ শান্ত ও চুপচাপ প্রকৃতির ছিলেন। তবে ছোট্ট নাতনিটি ছিল বেশ দুরন্ত। যদিও প্রণব এ সব দুষ্টুমি কিংবা চিৎকার-চেঁচামেচি একেবারেই সহ্য করতে পারতেন না। মাঝেমধ্যেই এ জন্য নাতনিকে বকাঝকা, এমনকি মারধরও করতেন তিনি। সম্প্রতি একাধিক বার নাতনিকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। প্রণবের এই আচরণে বিরক্ত হচ্ছিলেন তাঁর মেয়েও৷ ফের মেয়ের গায়ে হাত তুললে বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।
রবিবার সন্ধ্যায় সোনারপুর থানার অন্তর্গত কোদালিয়া কদমতলা থেকে চার বছরের ওই শিশুকন্যার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে পুলিশের অনুমান, রবিবার দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়েছিল ছোট্ট মেয়েটি। তখনই ঘটনাটি ঘটে। ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় শিশুটিকে। ওই শিশুর বাবা-মা উভয়েই চাকুরিজীবী। রবিবারও তাঁরা কাজে বেরিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন শিশুর দাদু, দিদা এবং শিশুটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা এক পরিচারিকা। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে আচমকা চিৎকারের শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে যান। ঘরে ঢুকতেই দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে ওই শিশু। সঙ্গে সঙ্গে তাকে সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনায় শিশুর দাদু, দিদা ও বাড়ির পরিচারিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে শিশুর দাদু প্রণবকে গ্রেফতার করা হয়।