বাসন্তীতে শাসক-দ্বন্দ্ব

গোলমালের খবর পেয়ে মহকুমাশাসক ধ্রুব দাস, সিআই রতন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এলাকা থেকে তিনটি বোমা উদ্ধার হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে আসেন বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈকত ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাসন্তী শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০১:৫৪
Share:

নিয়ন্ত্রণ: শুক্রবার বাসন্তীতে। ছবি: সামসুল হুদা।

অটো চালানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে তেতে উঠল বাসন্তী। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় দু’টি বাড়িতে। দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভায়। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কলতলা মোড়ে। বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘এই ঘটনায় জড়িত থাকায় অভিযোগে দু’পক্ষের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদেরও ধরা হবে।’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, কলতলা-চুনাখালি রুটে যুব তৃণমূলের সক্রিয় সদস্য সিরাজ সর্দারের কয়েকটি অটো চলে। বেশ কিছু দিন আগে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মন্টু গাজির অনুগামী হিসেবে পরিচিত আনসার মল্লিক, ইয়াকুব মোল্লারা সিরাজের অটো চালানো বন্ধ করে দেন। তা নিয়ে বিবাদ চলছিল। বৃহস্পতিবার সিরাজ জোর করে অটো চালাতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল বাধে।

তার জের কাটেনি শুক্রবারও। অভিযোগ, এ দিন সকালে সিরাজের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকজন তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়। সিরাজকে মারধর করে ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে যুব তৃণমূলের লোকজন ইয়াকুব মোল্লার বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায়, আগুন ধরিয়ে দেয়। দু’পক্ষের মারামারিতে ৩ জন জখম হন। তাঁদের ক্যানিং হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

Advertisement

গোলমালের খবর পেয়ে মহকুমাশাসক ধ্রুব দাস, সিআই রতন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এলাকা থেকে তিনটি বোমা উদ্ধার হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে আসেন বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈকত ঘোষ।

সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এ দিন অটো চালানো গিয়ে গণ্ডগোল হলেও বাসন্তী বিধানসভা এলাকা কার দখলে থাকবে তা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই থাকে। বাসন্তী ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি আমান লস্কর বলেন, ‘‘ওরা জোর করে আমাদের এক অনুগামীর অটো রাস্তায় নামাতে দেয়নি। প্রতিবাদ করলে ওরা বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এলাকা অশান্ত করছে ওরা।’’ যদিও বাসন্তী ব্লক তৃণমূল সভাপতি মন্টু গাজি বলেন, ‘‘এলাকা দখল করতে ওরা গণ্ডগোল করছে। আমাদের কর্মীদের মারধর করছে। ঘরবাড়ি লুঠপাট করছে, আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। মানুষকে ভয় দেখিয়ে ওরা এলাকা দখল করতে চাইছে।’’

গোষ্ঠীকোন্দল রুখতে ক’দিন আগেও জেলায় সভা করতে এসে বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি যে বিশেষ বদলায়নি, বাসন্তীর ঘটনা তারই প্রমাণ।

এ প্রসঙ্গে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি শক্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘দল এ ধরনের ঘটনার সমর্থন করে না। যারা এ সব করছে তারা নিজের দায়িত্বে করছে। দলগত ভাবে আমরা পুরো ঘটনার উপরে নজর রাখছি। দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশকে বলব, নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে যথাযত ব্যবস্থা নিতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন