হতশ্রী: এই চেহারা ছিল স্টেডিয়ামের। শেষ মুহূর্তে শুরু হয়েছে পরিচর্যা। ছবি: শান্তনু হালদার
চারিদিক খোলা। একপাশে পাশে আগাছার জঙ্গল। আর মাঝের অংশে বড় বড় ঘাস, ছোট ছোট গর্ত। কোথাও আবার জল-কাদার মধ্যে গোবরও নজরে আসবে। তারই মধ্যে চলছে বল নিয়ে দৌড়োদৌড়ি। ফুটবল প্রতিযোগিতা!
বৃহস্পতিবার অশোকনগর ২ নম্বর খেলার মাঠে অনূর্ধ্ব ১৪ সুব্রত কাপের রাজ্য প্রতিযোগিতার আসর বসেছে। এমন মাঠে ফুটবল খেলে খুদে খেলোয়াড় এবং স্কুলের শিক্ষকদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক স্কুল শিক্ষকের প্রশ্ন, ‘‘এত গুরুত্বপূর্ণ মানের প্রতিযোগিতা এমন খারাপ মাঠে হবে কেন? এখানে খেললে চোট-আঘাত লেগে যেতে পারে যে কোনও সময়ে।’’
শুক্রবার অবশ্য ওই মাঠে বড় ঘাস, গোবর বা কাদা ছিল না। প্রতিযোগীদের কথায়, ক্ষোভের আঁচ পেয়েই হয়তো রাতভর চেষ্টা করে মাঠের হাল ফেরানোর চেষ্টা করেছেন উদ্যোক্তারা।
অশোকনগর স্টেডিয়ামেও টুর্নামেন্টের কিছু খেলা হওয়ার কথা। স্টেডিয়ামের অবস্থাও অথৈবচ। সারা মাঠ জুড়ে কাদা। বৃষ্টি হলেই এখানে জল জমে যায়। শুক্রবার এই মাঠে একটি সেমিফাইনাল ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাঠের অবস্থা এতটাই খারাপ, ম্যাচ বাতিল করতে হয়েছে। দু’টি সেমিফাইনাল ম্যাচ হয়েছে অশোকনগর ২ নম্বর খেলার মাঠে। দুপুরে স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা গেল, গেটে তালা দেওয়া। ভিতরে মাঠ পরিচর্যার কাজ চলছে। বালি ফেলে গর্ত বোজানো হচ্ছে।
ফাইনাল ম্যাচ অবশ্য আজ শনিবার স্টেডিয়ামেই বসতে চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মাঠগুলির অবস্থা এমনিতেই খারাপ। তার উপরে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মাঠ দু’টি আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। জেলা স্কুল ভিত্তিক শারীর শিক্ষা ও যুব কল্যাণ আধিকারিক প্রবীর সাহাও বলেন, ‘‘অতি বর্ষণের কারণে মাঠের অবস্থা খারাপ হয়েছে।’’
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য প্রতিযোগিতার মতো বড় আসরের জন্য কেন আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হল না? মাঠ দু’টি অশোকনগর স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন রক্ষণাবেক্ষণ করে। সংগঠনের সভাপতি বরুণকুমার দাস অবশ্য বলেন, ‘‘কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে মাঠ ঠিক রাখা কি সম্ভব? বৃষ্টির জন্য কলকাতার মাঠগুলিতে পর্যন্ত খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি মাঠ ঠিক রাখতে।’’
সংগঠন সূত্রে খবর, অশোকনগর ২ নম্বর খেলার মাঠটি চারদিক খোলা থাকায় এখানে গরু চরে বেড়ায়। স্থানীয় ছেলেরা নিয়মিত খেলে। একটি ফুটবল কোচিং ক্যাম্পও চলে। তা ছাড়া, ফুটবল ও ক্রিকেট লিগের খেলাও হয়। ফলে মাঠ ফাঁকা পাওয়া যায় না। বরুণবাবু বলেন, ‘‘মাঠ ভাল রাখতে মাঠেরও বিশ্রাম দরকার।’’ তাঁর দাবি, নিয়মিত মাঠের জমা জল বের করা হয়। বালিও ফেলা হয়।