হতাশ: স্বপন সর্দার। —ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
বন্ধ, ভাঙচুরের জেরে ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারা গেল না হাসপাতালে। ফলে হাসপাতালে গিয়েও মৃত স্ত্রীর দেহ পেলেন না স্বামী। বুধবার জয়নগরের চালতাবেড়িয়ার ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, চালতাবেড়িয়ার বাসিন্দা স্বপন সর্দারের স্ত্রী এবং তিন সন্তান নিয়ে সংসার। সোমবার সকালে উনুন ধরাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হন স্বপনের স্ত্রী প্রতিমা (৩৫)। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে হাত পুড়ে যায় স্বপনেরও। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রতিমাকে প্রথমে স্থানীয় পদ্মেরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে বাঙ্গুর হাসপাতালে। বাঙ্গুরে সোমবারই মৃত্যু হয় প্রতিমার। মঙ্গলবার স্বপনের সারা দিন কেটে যায় হাসপাতাল এবং থানায় ছোটাছুটি করতে। বুধবার স্ত্রীর দেহ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাধ সাধল বন্ধ।
স্বপনের এক আত্মীয় জানান, এ দিন সকালে জয়নগর থানা থেকে সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে একটি ম্যাটাডরে করে বাঙ্গুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন স্বপন ও তাঁর কয়েকজন আত্মীয়। গোচরণের কাছে রাধাবল্লভতলায় তাঁদের পথ আটকান একদল বন্ধ সমর্থক। বেশ কিছুক্ষণ আটকে থাকতে হয়। তারপর একাধিক গাড়ির সঙ্গে ভাঙচুর চলে তাঁদের গাড়িতেও। অভিযোগ, স্বপনবাবুরা পরিস্থিতি জানিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য বন্ধ সমর্থকদের বারবার অনুরোধ করলেও রেহাই মেলেনি।
পরে পুলিশ এলে অবরোধ ওঠে। কিন্তু কাচ-ভাঙা গাড়ি নিয়ে যাওয়ার অনুমতি মেলেনি। অন্য গাড়ির জন্য চেষ্টা চালালেও, মেলেনি গাড়িও। শেষ পর্যন্ত অটোয় বারুইপুর এসে সেখান থেকে ট্রেন ধরার পরিকল্পনা করে বারুইপুর আসেন স্বপনরা। কিন্তু ট্রেন নিয়মিত না থাকায় সেখানেও দেরি হয় তাঁদের। শেষ পর্যন্ত অনেকটাই দেরি করে বাঙ্গুর হাসপাতাল পৌঁছন তাঁরা।
দু’একটি নিয়মকানুন তখনও বাকি ছিল। দেরি করে পৌঁছনোয় সে সব কাজ হল না। ফলে দেহ পাওয়া গেল না বুধবার। আজ, বৃহস্পতিবার আবার বাঙ্গুর হাসপাতাল আসতে হবে স্বপনকে।