Basirhat

বসিরহাটে ব্যাঙ্ক প্রতারণায় ধৃত দুই

পুলিশ ধৃতদের আটক করে ব্যাঙ্ক এবং কিয়স্কের প্রযোজনীয় নথি সিল করে দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা  

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৪৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পুলিশ বসিরহাটের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করল। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতেরা হলেন সাগ্নিক জোয়ারদার ও চুনিলাল সিংহ। সাগ্নিক হলেন ম্যানেজার। আর চুনিলাল ওই ব্যাঙ্ক সংলগ্ন একটি কিয়স্কের কর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, এই দু’জনের যোগসাজশে জাল নথি দিয়ে আত্মসাৎ করা হত গ্রাহকদের টাকা।

Advertisement

কী ভাবে চলত এই চক্র?

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কেউ মেয়াদি আমানতের টাকা রাখতে এলে সাগ্নিক গ্রাহককে পাঠিয়ে দিতেন পাশের কিয়স্কে। সেখানে চুনিলাল ফর্ম দিতেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তিনিই সেই ফর্ম পূরণও করে দিতেন। নেওয়া হত টিপসই। গ্রাহক সেই ফর্ম নিয়ে ফের যেতেন ম্যানেজারের কাছে। তখন তিনি একটি জাল কাগজ দিতেন। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, আসলে ওই টাকা ব্যাঙ্কে জমাই পড়ত না। অভিযোগ, সাগ্নিক ওই টাকা ব্যবসায়ীদের দিতেন। বিনিময়ে নিতেন চড়া সুদ। মেয়াদি আমানত উত্তীর্ণ হলে গ্রাহক জাল কাগজ নিয়ে আসতেন। সেই কাগজ রেখে দিয়ে ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সুদ গ্রাহকদের ফেরত দিতেন ম্যানেজার। বাজার চলতি ও ব্যাঙ্কের সুদের ফারাকেই জমে উঠেছিল ব্যবসা।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার ইটিন্ডার বাসিন্দা অনন্ত পাল ওই ব্যাঙ্কে যান। ৮ লক্ষ টাকার মেয়াদি আমানত ছিল তাঁর। নথি নিয়ে টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে এ সংক্রান্ত ব্যাঙ্কের নথি দেখার দাবি করেন অনন্ত। পুলিশ জানিয়েছে, সাগ্নিক মেয়াদি আমানতের টাকা দিতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু নথি দেখাতে চাননি। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় অনন্ত স্থানীয় গাছা-আখাড়পুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এবং পুলিশকে নিয়ে ফের ব্যাঙ্কে যান। তখনই প্রকাশ্যে আসে চক্র।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, গ্রাহকদের জমা রাখা প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা প্রতারণা হয়েছে। সাগ্নিক জোয়ারদার ও চুনিলাল সিংহ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ ধৃতদের বৃহস্পতিবার বসিরহাটের এসিজেএমে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত সাগ্নিকের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে।

পুলিশ ধৃতদের আটক করে ব্যাঙ্ক এবং কিয়স্কের প্রযোজনীয় নথি সিল করে দিয়েছে। এ দিন থানা চত্বরে দাঁড়িয়ে আব্দুল রজ্জাক মণ্ডল বলেন, ‘‘মেয়ের বিয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা রেখেছিলাম। এখন শুনছি আমাদের দেওয়া সাটিফিকেট সব জাল।’’ ওই ব্যাঙ্কের ভিজিল্যান্স অফিসার সিদ্ধার্থ দাসশর্মা বলেন, ‘‘একটা প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন