‘প্রণাম’-এর পথে হাঁটতে তৈরি হল ‘অর্পণ’। কলকাতা পুলিশের মতোই এ বার প্রবীণ নাগরিকদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট।
বেশ কয়েক বছর আগে কলকাতা পুলিশ শহরে একা থাকা প্রবীণ নাগরিকদের জন্য তৈরি করেছিল ‘প্রণাম’। এ বার এলাকার প্রবীণদের পাশে দাঁড়াতে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট তৈরি করল ‘অর্পণ’। সম্প্রতি তারই উদ্বোধন করলেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের খবর, তিনটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সঙ্গে নিয়েই তৈরি হয়েছে এই ‘অর্পণ’। ব্যারাকপুরের আর্দালি বাজারে গোয়েন্দাপ্রধানের অফিসের পাশেই ‘অর্পণ’-এর অফিস। সামাজিক পরিবর্তনের কারণে কলকাতার মতোই ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকাতেও একা হয়ে পড়ছেন প্রবীণেরা। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের সহযোগিতা করতে কেউ এগিয়ে আসেন না। এমনকী তাঁদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতেও কেউ পাশে থাকেন না। ফলে বার্ধক্যজনিত সমস্যা এমনকী বিভিন্ন আইনি সমস্যাও মোকাবিলা করতে হয় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের। সব মিলিয়ে অবসাদ ও নিরাপত্তাহীনতা গ্রাস করে বয়স্কদের একাংশের মধ্যে। বিভিন্ন সময়ে এমন অভিযোগ আসে থানাতেও।
২০০৭ সালে মেনটেনেন্স অব পারফেক্ট অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেন অ্যাক্ট চালু হয়। প্রবীণদের বিশেষ পরিষেবা দেওয়ার জন্য সে বছরই কলকাতা পুলিশ চালু করে ‘প্রণাম’। তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ইতিমধ্যেই বিধাননগর পুলিশের ‘সাঁঝবাতি’, হাওড়ার সিটি পুলিশের ‘শ্রদ্ধা’ প্রকল্পগুলি চালু হয়েছে। প্রবীণদের পাশে দাঁড়ানোর সেই ধারাবাহিকতায় এ বার নাম লেখাল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট।
পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র জানান, অর্পণের মূল অফিস থেকেই প্রবীণেরা আবেদনপত্র পাবেন। পূরণ করা আবেদনপত্রের সঙ্গে দু’টি ছবি আটকে জমা দিলে তবেই মিলবে পরিচয়পত্র। ২৫৪৫-৬৬৬৭ এই নম্বরে ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগ করতে পারবেন সদস্যরা। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের প্রতিটি থানায় ‘অর্পণ’ প্রকল্পের এক জন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে।
ব্যারাকপুর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সদর) অমিতাভ বর্মা বলেন, ‘‘আগের তুলনায় অনেকটাই এগিয়েছে সমাজ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পরিবার অথবা সমাজের তরফে প্রবীণরা অত্যাচারিত হয়ে থাকেন। সেই সব সমস্যার সমাধান করতে প্রবীণদের পাশে থাকবে ‘অর্পণ’।’’