ছড়াচ্ছে ক্ষোভের আঁচ 

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা শুক্রবার পথে নামলেন। এ দিন বহির্বিভাগের রোগী দেখেননি তাঁরা। ফলে বিপাকে পড়েন রোগী ও তাঁদের পরিবার-পরিজন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০৫:০১
Share:

উপরে, বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে বন্ধ আউটডোর। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের পরে রাজ্যের নানা প্রান্তে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ডামাডোল শুরু হয়েছে। চিকিৎসকেরা গণইস্তফা দিতে শুরু করেছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের ক্ষোভও প্রশমিত হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

Advertisement

পরিস্থিতির আঁচ পড়ছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্বাস্থ্য পরিষেবাতেও। ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১০ জন চিকিৎসক ইস্তফা দেওয়ার প্রস্তাব পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও রয়েছেন।

কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৩০ জন চিকিৎসকের মধ্যে জনা দশেক তিন দিন ধরে চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এই পরিস্থিতিতে সুপার রাজর্ষি দাস আউটডোরে বসে নিজেই রোগী দেখছেন। সুপার বলেন, ‘‘কয়েকজন চিকিৎসক ছুটির আবেদন করেছেন। এখন এনআরএস কাণ্ডের জেরে কর্মবিরতি পালন করছেন।’’

Advertisement

ভাঙড় ১ ও ২ ব্লকের হাসপাতালগুলিতে রোগীদের স্বাভাবিক চিকিৎসা পরিষেবাই দেওয়া হয়েছে এ ক’দিন। কিন্তু চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে শুক্রবার সেখানে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। ভাঙড় ১ ব্লকের নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স-সহ অন্য কর্মীরা এ দিন এক ঘণ্টার জন্য বহির্বিভাগ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করেন। বেলা ১টার পর থেকে অবশ্য তাঁরা আবার রোগী দেখা শুরু করেন। তবে কালো ব্যাজ পরে।

ভাঙড়ের দুই হাসপাতালে সমস্ত পরিষেবাই চালু রয়েছে। খোলা রয়েছে হাসপাতালের বহির্বিভাগ এবং জরুরি বিভাগও। নলমুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জায়গার হাসপাতালে পরিষেবা বন্ধ থাকায় ভাঙড়-সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ চিকিৎসার জন্য এখানে আসছেন। আগে যেখানে প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৭০০-৮০০ রোগী দেখতে হত, এখন দেখতে হচ্ছে ১২০০-১৪০০ রোগী। ভাঙড় ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিমেষ হোড় বলেন, ‘‘কিছু হলেই আমাদের উপরে হামলা হচ্ছে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা কোথায়? প্রতিনিয়ত আমাদের নানা হুমকির মধ্যে কাজ করতে হয়।’’ তিনি আরও জানান, জুনিয়র চিকি‌ৎসকদের উপরে যে হামলা হয়েছে তা নিন্দনীয়। তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তাঁরা এক ঘণ্টার জন্য প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করে পরে কালো ব্যাজ পরে রোগী দেখেছেন। হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য পুলিশি ব্যবস্থা নেই বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ভাঙড় ১ বিডিও সৌগত পাত্র বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু রাখার জন্য আমরা ব্লক স্বাস্থ্য দফতরকে অনুরোধ করেছিলাম। তারা পরিষেবা চালু রাখায় সাধুবাদ জানাই।’’

অন্য দিকে, ভাঙড় ২ ব্লকের জিরানগাছা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে সকাল থেকেই সমস্ত বিভাগের চিকিৎসকেরা রোগী দেখছেন।

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা শুক্রবার পথে নামলেন। এ দিন বহির্বিভাগের রোগী দেখেননি তাঁরা। ফলে বিপাকে পড়েন রোগী ও তাঁদের পরিবার-পরিজন। সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘বহির্বিভাগ বন্ধ থাকলেও এ দিন জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তির কাজ স্বাভাবিক নিয়মেই হয়েছে।’’ বনগাঁ শহরে এ দিন চিকিৎসকেরা প্রতিবাদ মিছিল করেন। সরকারি চিকিৎসকদের পাশাপাশি বেসরকারি চিকিৎসকেরাও সামিল হন। ছিলেন নার্স এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। কয়েকজন চিকিৎসক চাকরি ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানালেন। হাবড়া ও অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগও বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন রোগীরা।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন