বেশির ভাগ বুথে ভোটই হচ্ছে না

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের আসনে প্রায় পুরোটাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন শাসক দলের প্রার্থীরা।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০১:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পাঁচটি ব্লকের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে গিয়েছে শাসক দল। তবে আদালতের নির্দেশে সেই ফলাফল ঘোষণার উপরে স্থগিতাদেশ আছে।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের আসনে প্রায় পুরোটাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন শাসক দলের প্রার্থীরা। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সোনারপুর, বারুইপুর ও ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রের একাংশে নির্বাচন হচ্ছে। মূলত জয়নগর ও মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের অধিকাংশ আসনে শাসক দলের সঙ্গে টক্কর দিচ্ছে বিরোধীরা। মূলত ত্রিমুখী লড়াই। জয়নগর বিধানসভার ক্যানিং, বাসন্তী, গোসবা এলাকায় শাসক দলের সঙ্গে মূল টক্কর বিজেপির। বারুইপুর, সোনারপুর, জয়নগর ১, ২ কুলতলি এলাকায় শাসক দলের মূল বিরোধী বাম। মথুরাপুর লোকসভার কুলপি, কাকদ্বীপ, সাগর পাথরপ্রতিমায় ত্রিমুখী লড়াই।

এর মধ্যে ভাঙড় এ বার অবশ্যই নজরের কেন্দ্রবিন্দুতে। শুক্রবার গুলিতে নির্দল প্রার্থীর সমর্থকের মৃত্যুর পরে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। নির্বাচন কমিশনার ভাঙড়ের পরিস্থিতির উপরে বিশেষ নজর রাখতে বলেছেন ডিজিকে। যে ৯টি পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি আসনে লড়ছে জমি রক্ষা কমিটি, তারা শাসক দলকে সেখানে বেগ দিতে পারে বলে তৃণমূলের একাংশও মেনে নিচ্ছেন। বিশেষত, ভোটের আগে আরাবুল গ্রেফতার হওয়ার পরে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, তা নিয়ে কৌতুহল আছে সব মহলে।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘অধিকাংশ জায়গায় ত্রিমুখী লড়াইয়ের পরিবেশ তৈরি রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বহু ক্ষেত্রেই বিরোধীরা একজোট হয়ে গিয়েছে। জেলার অধিকাংশ এলাকায় নির্বাচন হচ্ছে না। সে সব জায়গা থেকে ভোটের এলাকায় রাজনৈতিক দলের কর্মীদের ভিড় বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যা সামাল দেওয়ার পুলিশ-প্রশাসনের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। রাজ্য জুড়ে একই দিনে নির্বাচন হওয়ায় নিরাপত্তায় কতটা কড়াকড়া থাকবে, তা সময়ই বলে দেবে।

সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা নির্বাচন নয়, প্রহসন। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রথম পর্বে শাসক দল ও প্রশাসনের যোগসাজসে মনোনয়ন দিতে বাধা দিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অধিকাংশ জয়ী হয়ে গিয়েছে। এখন নির্বাচনের দিন সব শক্তি ফলিয়ে সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে বাধা দেবে।’’

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বিজেপির পশ্চিম মণ্ডলের সভাপতি অভিজিৎ দাস বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে ভোটগ্রহণ বলা হচ্ছে কেন, তাই বুঝতে পারছি না। এটা একতরফা পেশিশক্তি দেখানো। এক বছর পরে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে মানুষ উপযুক্ত জবাব দেবেন।’’

বিরোধীদের বক্তব্য শুনে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘বিরোধীদের পাশে মানুষ নেই। সে কারণেই শাসক দলের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে নিজেদের মুখ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন