পঞ্চায়েত গড়তে চেয়ে উঠেপড়ে লেগেছিলেন বিজেপি নেতা শক্তি

শুক্রবার রাতে বাড়ির কাছেই দুষ্কৃতীরা কুপিয়ে খুন করেছিল মন্দিরবাজারের এই বিজেপি নেতাকে। ধরা পড়েছে দুই তৃণমূল কর্মী। বাকিদের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

মন্দিরবাজার শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০০:০৫
Share:

শক্তিপদ সর্দার

এলাকায় তাঁর হাত ধরেই সংগঠন বাড়াচ্ছিল বিজেপি। ১৫ আসনের পঞ্চায়েতে ৬টি আসন পেয়েছিল তারা। তৃণমূলকে ভাঙিয়ে পঞ্চায়েত গড়ার চেষ্টাও করছিলেন শক্তিপদ সর্দার। সেই আক্রোশেই তৃণমূলের লোকজন তাঁকে খুন করেছে বলে অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বের।

Advertisement

শুক্রবার রাতে বাড়ির কাছেই দুষ্কৃতীরা কুপিয়ে খুন করেছিল মন্দিরবাজারের এই বিজেপি নেতাকে। ধরা পড়েছে দুই তৃণমূল কর্মী। বাকিদের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, ধনুহাট পঞ্চায়েতে ১৫টি আসনের ৬টি পায় বিজেপি। ৯টি আসনে জিতেছে তৃণমূল। ওই ৯ জন তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীর মধ্যে আবার তিনটি গোষ্ঠী আছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। যার একটি গোষ্ঠী হাত মিলিয়েছিল শক্তির সঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত হাতছাড়া হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছিল শাসক দলের, দাবি বিজেপির। তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দলের জন্মলগ্ন থেকে অবশ্য সামনের সারিতে থেকে সংগঠন করেছেন শক্তি। পরে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় এলেও নব্য তৃণমূলের দাপটে কোণঠাসা হতে থাকেন। গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে বছর দু’য়েক আগে বিজেপিতে যোগদান করেন তিনি। দীর্ঘ দিন এলাকায় মাটি কামড়ে সংগঠন করার সুবাদে বিজেপির কাছেও শক্তি হয়ে ওঠেন গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর নেতৃত্বে ক্রমশ মন্দিরবাজারের ওই এলাকায় পায়ের তলায় জমি পেতে থাকে পদ্মফুল শিবির। তৃণমূলের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন যে কারণে, দাবি বিজেপি নেতাদের। তাঁদের অভিযোগ, মিথ্যা মামলায় শক্তিকে ফাঁসানোর চেষ্টা শুরু করে শাসক শিবির। বোমাবাজির একটি ঘটনায় শক্তির নাম জড়ায়। এ সব কারণেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল বলে দাবি বিজেপির।

Advertisement

শক্তিকে খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে মন্দিরবাজার ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অলোক ভট্টাচার্যের। অলোক-সহ ৮ জনের নামে থানায় অভিযোগ করেছে পরিবার। অলোকের অবশ্য দাবি, বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি শক্তি মণ্ডলের দাবি, এক সময়ে শক্তি তাঁদের দলে থাকলেও পরে দল থেকে বের করে দেওয়া হয়। বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে খুন বলে দাবি তাঁরও। তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘আমাদের দলের কেউ এই ঘটনায় জড়িত নয়।’’ তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথাও মানতে চাননি তিনি।

এ দিকে, শক্তি খুনের বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার সকাল থেকে মন্দিরবাজার থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করে বিজেপি। বিকেলে বিজয়গঞ্জ বাজারে ধিক্কার মিছিল বেরোয়।

বিজেপির জেলা সহ সভাপতি সুফল ঘাটু বলেন, ‘‘শক্তির হাত ধরে এলাকায় বিজেপির প্রভাব বাড়ায় শাসক দলের দুষ্কৃতীদের হাতে মরতে হল ওঁকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন