নিখোঁজ বৃদ্ধের দেহ শনাক্ত হল ১১ দিন পরে

তিন দিন পরে ৬ মার্চ, উত্তর বন্দর থানা এলাকার ছোটেলাল ঘাট থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সেই দেহ রাখা হয়েছিল মর্গে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৮ ০২:৫৭
Share:

সত্যকুমার গুপ্ত।

বারো দিন আগে বরাহনগরের এক বৃদ্ধ নিখোঁজ হয়েছিলেন। বুধবার মর্গে গিয়ে তাঁকে শনাক্ত করলেন তাঁর পরিজনেরা। দেরিতে দেহ শনাক্তকরণ নিয়ে বৃদ্ধের পরিবার কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেছে। লালবাজার অবশ্য কোনও গাফিলতির কথা স্বীকার করেনি।

Advertisement

কলকাতা পুলিশ জানায়, সত্তর বছরের সত্যকুমার গুপ্ত ৩ মার্চ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। তিনি ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন। সম্প্রতি তাঁর হৃদ্‌পিণ্ডে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। ক্যানসারের অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। নিখোঁজ হওয়ার রাতেই বরাহনগর থানায় ডায়েরি দায়েক করা হয় বলে জানিয়েছে বৃদ্ধের পরিবার।

তিন দিন পরে ৬ মার্চ, উত্তর বন্দর থানা এলাকার ছোটেলাল ঘাট থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সেই দেহ রাখা হয়েছিল মর্গে। বৃদ্ধের পরিবারের দাবি, ৫ ও ১০ মার্চ উত্তর বন্দর থানায় তাঁরা যোগাযোগ করেন। কিন্তু ওই থানা বৃদ্ধের কোনও খবর দিতে পারেনি। তাঁরা বুধবার কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে সত্যবাবুর ছবি ও নিখোঁজ হওয়ার কথা জানান। তা দেখে লালবাজার জানায়, বৃদ্ধের চেহারার সঙ্গে মিল রয়েছে এমন একটি দেহ মর্গে রাখা রয়েছে। রাতে সেখানে গিয়ে বৃদ্ধকে শনাক্ত করেন পরিজনেরা। ক্যানসারের অস্ত্রোপচারের কারণে তাঁর চোয়ালের একাংশ বাদ গিয়েছিল। সেই চিহ্ন দেখেই শনাক্ত করা হয় তাঁকে।

Advertisement

কলকাতা পুলিশ জানায়, যে কোনও থানা এলাকায় অজ্ঞাতপরিচয় দেহ উদ্ধার হলে সেটি মর্গে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে মৃতদেহের ছবি কলকাতা-সহ রাজ্যের প্রতিটি থানায় পাঠানো হয় শনাক্তকরণের জন্য। কোনও ব্যক্তি বা অন্য কোনও থানার পুলিশ সেই মৃতদেহের খোঁজ নিতে সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করলে তাঁকে বা পুলিশকর্মীকে মর্গে পাঠানো হয় দেহ শনাক্তকরণের জন্য। বরাহনগরের মৃতদেহটির
ক্ষেত্রে তাঁর পরিজনেরা উত্তর বন্দর থানায় ফোন করে খোঁজ নিতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। কিন্তু পুলিশ বলছে, বরাহনগর থানা থেকে ফোন করে কেউ ওই মৃতদেহের খোঁজ নিতে চায়নি। পরিজনেরা কোন দিন, কোন সময় উত্তর বন্দর থানায় ফোন করেছিলেন, তা জানা গেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

কিন্তু পরিজনেদের বক্তব্য, বরাহনগর থানা সত্যবাবুর নিখোঁজের খবর ডায়েরিতে নথিভুক্ত করে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশে তাঁর ছবি পাঠিয়ে দিয়েছিল ৩ মার্চ রাতে বা ৪ মার্চ সকালে। ৬ মার্চ সত্যবাবুর দেহ উদ্ধার হওয়ার পরে বরাহনগর থানার পাঠানো ছবি দেখে কলকাতা পুলিশ তাঁকে শনাক্ত করল না কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন পরিজনেরা।

লালবাজারের এক কর্তা জানান, বরাহনগর থানা ওই বৃদ্ধের ছবি আদৌ পুলিশের সার্ভারে আপলোড করে সর্বত্র পাঠিয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও গাফিলতি থেকে থাকলে, উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন