জখম: গুলি লাগার পরে ফতেমা বিবি। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
ফের অশান্ত ভাঙড়! আবারও পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীদের গ্রামে বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ। মঙ্গলবার সকাল থেকে খামারআইট ও মাছিভাঙা গ্রামে বোমা-গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠল আরাবুল ইসলাম বাহিনীর বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে খবর, গুলিতে জখম হয়েছেন ফতেমা বিবি নামে খামারআইট গ্রামের বাসিন্দা এক মহিলা। তাঁকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন বিকেলে পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন নতুনহাট এলাকায় জনসভার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। ওই সভা বানচাল করতেই সকাল থেকে আরাবুল বাহিনী এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, সকালে খামারআইট গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তীকে খামারআইট গ্রামের যে ব্যক্তি আশ্রয় দিয়েছেন, সেই ওলি মহম্মদের বাড়িতেও হামলা চালায় আরাবুল বাহিনী।
এ দিন বিকেলে নতুনহাট এলাকায় ওই সমাবেশে এসেছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়-সহ একাধিক সংগঠনের নেতারা। অশোকবাবুর গাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
অশোকবাবু নতুনহাট ছেড়ে বেরিয়ে যান। পরে তিনি বলেন, ‘‘আলোচনার মাধ্যমে উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু বহিরাগতদের মাধ্যমে হামলা চালিয়ে আন্দোলকারীদের দমন করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, অশোকবাবুর গাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার পরে কয়েকটি গাড়ি শ্যামনগর মোড়ের কাছে আটকে দেন ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা হাবিবুর রহমান। গাড়ি থেকে নেতাদের নামিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে ওই সংগঠনের নেতাদের উদ্ধার করে কাশীপুর থানায় নিয়ে আসে।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাঁদের গ্রামে বহিরাগতে-হামলা চললেও কোনও পুলিশি অভিযান চোখে পড়েনি। পুলিশের বড়কর্তারা কাশীপুর থানায় বৈঠক করলেও ওই সব গ্রামে অভিযান করেননি।
জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘আমাদের কাছে ওই সব গ্রামে হামলার খবর এসেছে। কিন্তু আন্দোলকারীদের গ্রামে পুলিশি অভিযান করলেই নানা ভাবে বাধা দেওয়া হয়। সেই কারণে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযান করা হয়নি। তবে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।’’
যদিও ওই সব গ্রামে হামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন আরাবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘‘আমি এলাকার বাইরে রয়েছি। ভাঙড়ে কোনও হামলা হলেই তো আরাবুলের নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি কোনও হামলার ঘটনায় নেই।’’ কিন্তু আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, আরাবুল ও তাঁর ছেলে হাকিবুলই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন।