এগিয়ে এলেন চিকিৎসক-নার্স-কর্মী

রক্ত-সঙ্কটে শিবির হল হাসপাতালে

প্রতি বছরই গরমে রক্তের আকাল দেখা দেয় ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে। রক্তদান শিবিরের সংখ্যা কমে আসে। কিন্তু মানুষের রক্তের প্রয়োজন তো আর সে হিসেব মেনে ঠিক হয় না।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১২
Share:

রক্তদান: বনগাঁ হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

প্রতি বছরই গরমে রক্তের আকাল দেখা দেয় ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে। রক্তদান শিবিরের সংখ্যা কমে আসে। কিন্তু মানুষের রক্তের প্রয়োজন তো আর সে হিসেব মেনে ঠিক হয় না।

Advertisement

আর সেই প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখেই জোগানের উপায় বের করেছেন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার গোপাল পোদ্দার। মূলত দু’টি গ্রুপের রক্তের অভাব ছিল। হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মী, নার্সদের অনুরোধ করেন গোপালবাবু। সাড়াও মিলেছে। সোমবার ব্লাড ব্যাঙ্কের একটি ঘরে আয়োজন করা হয়েছিল রক্তদান শিবিরের। ৮ জন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ৩৭ জন রক্তদান করেছেন এ দিন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেল, ব্লাড ব্যাঙ্কে চাহিদার তুলনায় এ এবং বি পজেটিভ গ্রুপের রক্তের ঘাটতি চলছে। রোজ গড়ে ওই হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে এ এবং বি পজেটিভ রক্তের চাহিদা থাকে ১০-১৫ ইউনিট। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে এ পজেটিভ গ্রুপের রক্ত আছে ২০ ইউনিট। বি পজেটিভ গ্রুপের রক্ত মজুত আছে মাত্র ১৪ ইউনিট। গোটা মহকুমায় একমাত্র ওই হাসপাতালের রক্তের উপরেই প্রায় ১১ লক্ষ মানুষ নির্ভরশীল। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরাও এই ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত পেয়ে থাকেন। জানা গিয়েছে, এ দিন যাঁরা রক্ত দিয়েছেন, তাঁদরে মধ্যে বি পজেটিভ ২৭ ইউনিট রক্ত মিলেছে। এ পজেটিভ মিলেছে ১০ ইউনিট।

Advertisement

গোপালবাবু বলেন, ‘‘হঠাৎ করে এ এবং বি পজেটিভ গ্রুপের রক্তের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আজকের শিবির থেকে পাওয়া রক্ত এবং মঙ্গলবার আরও একটি রক্তদান শিবির আছে বাইরে। সব মিলিয়ে সমস্যা মিটে যাবে বলেই আশা করছি।’’

হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাসে মোট ১৯টি রক্তদান শিবির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দিন কয়েকের মধ্যে পর পর তিনটি শিবির নানা কারণে বাতিল হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া, যে সব শিবির ইতিমধ্যে হয়েছে, সেখানেও এ এবং বি পজেটিভ রক্ত কম মিলেছে বলে জানিয়েছেন গোপালবাবু।

এ দিন ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখা গেল, রক্ত দিচ্ছিলেন ব্লাড ব্যাঙ্কের টেকনিশান বছর তেত্রিশের যুবক চন্দ্রভূষণ চৌধুরী। বললেন, ‘‘আগে কখনও রক্ত দান করিনি। কিন্তু সমস্যার কথা জানতে পেরে রাজি হয়ে গেলাম।’’ রক্তদান করেছেন হাসপাতালের এইচডিইউ-এর নার্স পূবালি দাস, ওটি স্টাফ বিপ্লব চক্রবর্তীরা। পূবালিদেবী বলেন, ‘‘আগেও রক্ত দান করেছি। এ বার গোপালবাবু কাছে সমস্যা জানতে পেরে আর ভাবতে সময় নিইনি।’’

হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য পরিষেবা ঠিক রাখতে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীরা যে ভাবে এগিয়ে এসেছেন, তা সত্যিই দৃষ্টান্তমূলক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন