ছেলের দেহ পড়ে আছে নালায়, গাছে ঝুলছে মা ও তাঁর প্রেমিক

বাঁশবাগানে একটি গাছের ডালে একই ওড়নায় বাঁধা দুটি দেহ ঝুলতে দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। কিছুটা দূরেই একটি শুকনো নালার মধ্যে পড়ে রয়েছে বছর ছয়েকের এক শিশুর মৃতদেহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৪১
Share:

এই গাছেই দেহগুলি দেখতে পায় গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র।

বাঁশবাগানে একটি গাছের ডালে একই ওড়নায় বাঁধা দুটি দেহ ঝুলতে দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। কিছুটা দূরেই একটি শুকনো নালার মধ্যে পড়ে রয়েছে বছর ছয়েকের এক শিশুর মৃতদেহ। রবিবার ভোর ৬টা নাগাদ বনগাঁর দক্ষিণ ছয়ঘরিয়ার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।

Advertisement

খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহগুলি উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম চন্দন ভট্টাচার্য (৩২), হেমলতা মণ্ডল (২৫) ও নীল মণ্ডল (৬)। হেমলতা তাঁর ছেলে নীলকে নিয়ে নিউটাউনের ঢালিপাড়ায় থাকতেন। চন্দনের বাড়ি বনগাঁর মধ্য ছয়ঘরিয়ায়। ওই যুবকের সঙ্গে হেমলতার বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক ছিল বলে পুলিশের অনুমান। ঘটনাস্থল থেকে বিষের শিশি ও ঠান্ডা পানীয়ের বোতল পাওয়া গিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬ এপ্রিল নিউটাউনে বাড়ির কাছেই গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিল নীল। রাত ৮টা নাগাদ হেমলতা তাকে আনতে যাচ্ছি বলে বাড়ির থেকে বের হন। হেমলতার স্বামী দাশু মণ্ডল জানান, এরপর থেকেই স্ত্রী ও ছেলে নিখোঁজ ছিলেন। সারারাত এলাকায় খোঁজার পরও তাদের পাওয়া যায়নি। তারপরেই নিউটাউন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।

Advertisement

তদন্তকারীদের দাবি, ছেলেকে নিয়ে হেমলতা চন্দনের কাছে যায়। চন্দন তাঁদের নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে চন্দনের বাবা সুদীপ ভট্টাচার্য ও মা তাপসী ভট্টাচার্য এই সম্পর্কে আপত্তি জানিয়ে তাঁদের বাড়ির থেকে চলে যেতে বলেন। এরপরে এ দিন সকালে তাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ঠান্ডা পানীয়ের মধ্যে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে ওই শিশুকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন চন্দন ও হেমলতা। শিশুটির মাথায় ও গায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।

দাশুবাবু বলেন, ‘‘নিউটাউন থানার পুলিশ মারফত জানতে পারি যে ছেলে ও হেমলতা বনগাঁতে রয়েছে। তাই এ দিন ভোরবেলায় তাঁদের আনতে যাচ্ছিলাম। এমন সময় বনগাঁ থানার পুলিশ ফোন করে জানায় ওদের পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু এ ভাবে আমার ছেলেকে দেখতে হবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি।’’ স্ত্রীর বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কের কথা তাঁর অজানা ছিল বলে দাবি দাশুবাবুর। বছর আটেক আগে পেশায় অটোচালক দাশুবাবুর সঙ্গে হেমলতার বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে কোনও পারিবারিক অশান্তিও ছিল না। পুলিশ জানিয়েছে, চন্দন নিউটাউন এলাকাতেই সিকিওরিটি গার্ডের কাজ করতেন। সেখান থেকেই হেমলতার সঙ্গে তাঁর পরিচয়।

এ দিন মৃত ছেলেকে কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন দাশুবাবু। চন্দনের বাবা মা ঘটনাস্থলে এসে হতবাক হয়ে পড়েন। দেহগুলি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement