অবরোধ: তখনও উত্তেজনা। ছবি: নির্মল বসু
অনুমোদিত রুটে বাস চলতে দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগে অনির্দিষ্টকাল বাস ধর্মঘটের ডাক দিল বসিরহাট মহকুমা বাস মালিক সমিতি।
শনিবার সকালে বাস মালিকেরা বসিরহাট শহরের ত্রিমোহণী এলাকায় রাস্তার উপরে বাস রেখে প্রতিবাদে সোচ্চার হন। পুলিশি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ দিকে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সমিতির পক্ষে বসিরহাটের ৮টি রুটের ২৫২টি বাস বন্ধ রাখার ডাক দেওয়া হয়।
মহকুমা প্রশাসন ও বাস ইউনিয়ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইছামতীর ধারে গড়ে ওঠা বসিরহাট শহরে ইটিন্ডা, মার্টিনবার্ন এবং টাকি রোড— এই তিনটি প্রধান রাস্তা। মার্টিনবার্ন এবং টাকি রাস্তার খুবই খারাপ অবস্থা। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তা মেরামতির দাবিতে এলাকাবাসী অবরোধ-বিক্ষোভও করছেন।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে ত্রিমোহণী থেকে বোটঘাট পর্যন্ত কংক্রিটের রাস্তা তৈরির জন্য ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। বাস মালিক সমিতির অভিযোগ, মাত্র ২ কিলোমিটারের পরিবর্তে বর্তমানে তাদের প্রায় ১২ কিলোমিটার ঘুরপথে বোটঘাটে পৌঁছতে হচ্ছে। ফলে এক দিকে যেমন বাড়তি তেল খরচ হচ্ছে, তেমনই বাড়তি পথ যেতে না চাওয়ায় যাত্রী কমছে।
অথচ, রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার পরে অন্য গাড়ি চলাচলের অনুমতি মিললেও ওই রাস্তায় বাস চলাচল এখনও বন্ধ। সে জন্য কোনও কারণও দেখানো হচ্ছে না।
তারই প্রতিবাদে এ দিন সকালে বাস নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। ত্রিমোহণী দিয়ে ইটিন্ডা রোডে বাস ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বক্তব্য, মহকুমাশাসক কিংবা পুরপ্রধান না বলা পর্যন্ত ওই রাস্তায় বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই।
এই নিয়ে বচসা বাধে। উভয় পক্ষের ধ্বস্তাধস্তিও হয়। বসিরহাট মহকুমা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক প্রভাস দাস বলেন, ‘‘গত এক বছর রাস্তা মেরামতির জন্য ত্রিমোহণী থেকে বোটঘাট যাওয়ার ইটিন্ডা রাস্তা বন্ধ। ঘুরপথে যেতে প্রতিদিন হাজার টাকার উপরে বাড়তি খরচ হচ্ছে। যাত্রীও কমেছে। ৫-৬ আগে নতুন রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। সব রকম গাড়ি চলছে। কিন্তু অজানা কারণে বাস চলতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসনের সর্বত্র জানিয়েও কাজ হচ্ছে না বলে বাস বন্ধের ডাক দিতে বাধ্য হয়েছি।’’ মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি বলেন, ‘‘শহরের মধ্যে যানজট এড়াতে এবং রাস্তা তৈরির জন্য সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই ওই রাস্তায় বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। একটি বাসের মালিকেরা চাইছেন, ওই রাস্তায় বাস চালাতে। বিষয়টি আগের মতোই সব পক্ষকে ডেকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ পাশাপাশি তিনি আরও জানান, যাঁরা জিনিসপত্র, সাইনবোর্ড, ফ্লেক্স টাঙিয়ে ইটিন্ডা রাস্তা দখলের চেষ্টা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।