Shahjahan Sheikh

শাহজাহানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে ‘দুর্ঘটনা’! আদালতে যাওয়ার পথে মৃত ২, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

বুধবার সকালে চার চাকার একটি গাড়ি বাসন্তী হাইওয়েতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে রাস্তার পাশের নয়ানজুলিতে পড়ে গাড়িটি। লরিটিও জলে পড়ে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় চার চাকার গাড়িতে থাকা দু’জনের।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:০১
Share:

(বাঁ দিকে) শাহজাহান শেখ। (ডান দিকে) সাক্ষী ভোলা ঘোষ। পিছনে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ইডির উপর শাহজাহান শেখের অনুগামীদের হামলার অন্যতম সাক্ষী এ বার পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম । মৃত্যু হয়েছে সাক্ষীর কনিষ্ঠ পুত্র এবং গাড়িচালকের। বুধবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের সন্দেশখালিতে। মৃতের পরিবারের দাবি, নিছক দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পনামাফিক হামলা হয়েছে। কারণ, বুধবার আদালতেই যাচ্ছিলেন শাহজাহানের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মামলার অন্যতম ওই সাক্ষী। তবে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ‘পরিকল্পনামাফিক হামলা’র কোনও লিখিত অভিযোগ বসিরহাট পুলিশ পায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক কর্তা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার সকালে চার চাকার একটি গাড়ি বাসন্তী হাইওয়েতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে রাস্তার পাশের নয়ানজুলিতে পড়ে গাড়িটি। লরিটিও জলে পড়ে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় চার চাকার গাড়িতে থাকা দু’জনের। আরও দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মিনাখাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।

খানিক পরে জানা যায়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিতে ছিলেন ভোলা ঘোষ এবং তাঁর ছোট ছেলে সত্যজিৎ ঘোষ। বসিরহাট আদালতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা। অকুস্থলে মারা যান সত্যজিৎ এবং গাড়িচালক শাহানুর মোল্লা। আহত ভোলার দাবি, ‘সন্দেহজনক ভাবে’ তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা দেওয়া হয়। ভোলার জ্যেষ্ঠপুত্র বিশ্বজিৎ ঘোষের অবশ্য সরাসরি অভিযোগ, প্রাক্তন তৃণমূল নেতা জেলবন্দি শাহজাহানের অঙ্গুলিহেলনে তাঁর বাবা এবং ভাইকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। তিনি আঙুল তুলেছেন শাহজাহনের ঘনিষ্ঠ সবিতা রায় এবং মোসলেম শেখ নামে স্থানীয় দু’জনের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করছে ন্যাজাট থানার রাজবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ।

Advertisement

ভোলা জানান, তিনি গাড়ির পিছনের আসনে বসেছিলেন। সামনে চালকের পাশের আসনে বসেছিলেন ছেলে। তিনি বলেন, ‘‘মালঞ্চের দিকে যাওয়ার সময় বয়ারমারি পেট্রল পাম্পের কাছে একটি ট্রাক ধাক্কা মারে। তার পর রাস্তার ধারে ভেড়িতে পড়ে যায় গাড়ি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কোর্টে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। ঠিক বয়ারমারি পার হয়েছি, তখনই ওই লরিটি বাঁ দিক দিয়ে এসে আমাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। সোজা জলে পড়লাম আমরা। সংজ্ঞা হারিয়েছিলাম... আমার মনে হয় এটা পরিকল্পিত। তবে প্রশাসনই ভাল বলতে পারবে।’’

উল্লেখ্য, শাহজাহান এখন জেলবন্দি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে। জেলবন্দি অবস্থায় সন্দেশখালির নানা ব্যক্তিকে হুমকি, হুঁশিয়ারি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। বুধবারের দুর্ঘটনাতেও শাহজাহান এবং তাঁর বাহিনীর চক্রান্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভোলার জ্যেষ্ঠপুত্রের দাবি, ক্রমাগত তাঁদের কাছে হুমকি আসছিল। কারণ, তাঁর বাবা শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষী হয়েছেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর বাবা-ভাইকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। সেই মাফিক এই ‘দুর্ঘটনা।’

অন্য দিকে, শাহজাহানের বিরুদ্ধে চলা সিবিআইয়ের মামলার মূল সাক্ষীর গাড়িতে ধাক্কা মেরেছে যে লরিটি, তার চালক পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। মৃতের পরিবারের দাবি, ওই লরির চালক সন্দেশখালির বাসিন্দা এবং শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ। শাহজাহানদের কথাতেই গাড়িতে ধাক্কা মেরেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement