SIR in West Bengal

প্রথম স্ত্রীর এনুমারেশন ফর্মে দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম তুলে অভিযুক্ত স্বামী! তুঙ্গে তৃণমূল-বিজেপির বিবাদ

অশোকের ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’র নাম বিউটি রায়। তাঁকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। অশোকও বাড়িতে নেই। যুবকের দাদা নবকুমার রায় এবং তাঁর স্ত্রী অমলা রায় বলেন, ‘‘অশোক অন্যায় কাজ করেছে।’’ তাঁরা স্বীকার করে নেন, প্রথম স্ত্রীর এপিক নম্বরে দ্বিতীয় স্ত্রীর ছবি ব্যবহার করেছেন অশোক।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:০৭
Share:

নথিপত্র হাতে অশোকের প্রথম স্ত্রী ঊষা রায়। —নিজস্ব চিত্র।

সংসার ছেড়ে চলে গিয়েছেন স্ত্রী। তাঁর ভোটার কার্ড ব্যবহার করে এক বাংলাদেশি মহিলাকে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে এসআইআরে নাম তোলার চেষ্টার অভিযোগ উঠল নদিয়ার যুবকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক শোরগোল তুঙ্গে। অভিযোগ দায়ের হয়েছে বিডিও অফিসে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, নদিয়ার হাঁসখালির শ্যামনগর মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা অশোক রায়ের স্ত্রী ঊষা রায় স্বামীর অত্যাচারে বাড়়ি ছেড়েছেন। তাঁর সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদ হয়েছে কি না জানা যায়নি। তবে তার মধ্যে আর এক যুবতীকে বিয়ে করেন অশোক। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, ওই যুবতী বাংলাদেশি। অশোক প্রথম স্ত্রীর এপিক (ভোটার) কার্ড চুরি করে তাঁর পরিচয় দিয়েই দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম নথিভুক্ত করার চেষ্টা করেছেন। ওই খবর পেয়েছেন ঊষাও। তাঁর দাবি, স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সন্তানকে নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন তিনি। এখন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে পরিচারিকার কাজ করে অন্ন সংস্থান করেন। কিছু দিন আগে জানতে পারেন, স্বামী এক বাংলাদেশি মহিলাকে বিয়ে করেছেন।

ঊষার আরও অভিযোগ, তিনি এসআইআরের জন্য এনুমারেশন ফর্ম নিতে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর স্বামী ইতিমধ্যে ওই ফর্ম নিয়ে গিয়ে পূরণ করে জমাও দিয়ে দিয়েছেন। শুনে স্বামীর কাছে খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে তাড়িয়ে দেন অশোক। এখন মহিলার অভিযোগ, ‘‘আমার এপিক নম্বর, নাম, বয়স এবং ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু ছবি পরিবর্তন করে বাংলাদেশি স্ত্রীর ছবি বসিয়েছে স্বামী।’’ ঊষার আশঙ্কা, তাঁকে বাংলাদেশি দেখানোর চেষ্টা করছেন স্বামী। অন্য দিকে, সতীনকে তাঁরই পরিচয় দিয়ে ভোটার কার্ড বানানোর চেষ্টা করছেন অশোক।

Advertisement

অশোকের ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’র নাম বিউটি রায়। তাঁকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। অশোকও বাড়িতে নেই। যুবকের দাদা নবকুমার রায় এবং তাঁর স্ত্রী অমলা রায় বলেন, ‘‘অশোক অন্যায় কাজ করেছে।’’ তাঁরা স্বীকার করে নেন, প্রথম স্ত্রীর এপিক নম্বরে দ্বিতীয় স্ত্রীর ছবি ব্যবহার করেছেন অশোক। বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও) বিশ্বজিৎ বরও জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁদের নজরে এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘দু’জনের এপিক নম্বর এক হওয়া সত্ত্বেও ছবি আলাদা।’’

এ নিয়ে কৃষ্ণগঞ্জের ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি শুভদীপ সরকার প্রশাসনিক তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রকৃত ভোটারের নাম লিপিবদ্ধ করার এবং ভোটার তালিকায় জালিয়াতি চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি আমরা।’’ অন্য দিকে, বিজেপি নেতা অমিত প্রামাণিক এই অভিযোগকে ‘সাংঘাতিক’ বলে আখ্যা দিয়ে তৃণমূলের ‘যোগসাজশ’ রয়েছে বলে সন্দেহপ্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘ঊষা দেবী হাসঁখালির বিডিওকে লিখিত অভিযোগ জানাতে গেলেও বিডিও তা গ্রহণ করেননি। যা চক্রান্তের প্রমাণ। সঠিক তদন্ত এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’ ঊষা জানান, তিনি হাঁসখালি থানা এবং রানাঘাটের এসডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement