গাইঘাটায় ধৃত পাচারকারী
Gaighata

গরু পাচারের চেষ্টা, চলল গুলি 

বাহিনীর দাবি, আত্মরক্ষার তাগিদে এক জওয়ান নিরাপদ দূরত্বে তাঁর পিএজি (পাম্প অ্যাকশন গান)  থেকে ১ রাউন্ড গুলি চালান। শব্দ শুনে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জওয়ানেরা একজনকে ধরে ফেলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ০২:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে চলা গরু পাচার চক্রের জাল গোটাতে সিবিআই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে। পাচারচক্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে সিবিআই ইতিমধ্যেই প্রাক্তন এক বিএসএফ কর্তা ও এক গরু ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

এই পরিস্থিতির মধ্যেই গাইঘাটা সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের চেষ্টার ঘটনা ঘটল। যদিও বিএসএফ জওয়ানদের তৎপরতায় সেই চেষ্টা ভেস্তে গিয়েছে।

রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার ঝাউডাঙা সীমান্তে। গরু পাচারের সময়ে বিএসএফ এক বাংলাদেশি পাচারকারীকে আটক করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে পাচারের গরু। পাচারকারীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত বাংলাদেশি পাচারকারীর নাম আরিফ মহম্মদ। বাড়ি বাংলাদেশের সারসা এলাকায়।

Advertisement

বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানেরা ঝাউডাঙা সীমান্তে পেট্রোলিং করছিলেন। তাঁরা দেখেন, গবাদি পশু-সহ কয়েকজন পাচারকারী আন্তর্জাতিক সীমানার দিকে যাচ্ছে। বিএসএফ তাদের থামতে বলে। অভিযোগ, পাচারকারীরা বাঁশের লাঠি এবং দা নিয়ে জওয়ানদের আক্রমণ করার চেষ্টা করে।

বাহিনীর দাবি, আত্মরক্ষার তাগিদে এক জওয়ান নিরাপদ দূরত্বে তাঁর পিএজি (পাম্প অ্যাকশন গান) থেকে ১ রাউন্ড গুলি চালান। শব্দ শুনে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জওয়ানেরা একজনকে ধরে ফেলেন। উদ্ধার একটি হয় গরু।

বিএসএফ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত পাচারকারী জানিয়েছে, সে দু’বছর ধরে গবাদি পশু পাচারের সঙ্গে জড়িত। চোরাপথে এ দেশে এসে ভরাডাঙা থেকে গরু সংগ্রহ করেছিল। গরুগুলি তারা স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে রাখার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। পরে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হত। গরুগুলি ও পারে নিয়ে গিয়ে গাইসুদ্দিন ও সরফুল ইসলাম নামে দুই ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। এই কাজের জন্য আরিফকে ২ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল বলেও জেরায় সে জানিয়েছে।

বিএসএফের ১৫৮ ব্যাটালিয়নের কম্যান্ডিং অফিসার আরএস ভান্ডারী জানিয়েছেন, সীমান্তে জওয়ানেরা সতর্ক আছেন। সে জন্যই পাচারকারীকে ধরা সম্ভব হয়েছে।

এই ঘটনায় সীমান্তে বসবাসকারী মানুষেরা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। তাঁদের আশঙ্কা, ফের অতীতের ভয়ঙ্কর স্মৃতি ফিরে আসবে না তো!

ঝাউডাঙা সীমান্তের পাশেই আংরাইল। যা গরু পাচারের জন্য কুখ্যাত। বছর তিনেক আগেও এই সব সীমান্ত দিয়ে রমরমিয়ে গরু পাচার হত। ভিনরাজ্য থেকে ট্রাকে করে ছোট গাড়িতে করে এখানে গরু আনা হত। বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এ দেশে ঢুকে পড়ত। এ দেশ থেকে গরু নিয়ে ইছামতী নদী পেরিয়ে ও দেশে নিয়ে যেত। লোকজন ভয়ে সন্ধ্যার পরে বাড়ি থেকে বেরোতে পারতেন না। চাষের জমি, বাড়ির উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হত গরু। প্রতিবাদ করার সাহস ছিল না কারও। প্রতিবাদ করে এক আরপিএফ জওয়ানকে বাংলাদেশি পাচারকারীদের হাতে খুন হয়েছিলেন। তাঁর বাড়ি ছিল আংরাইল এলাকায়। এক শিক্ষকও পাচারকারীদের হাতে মার খান। বিএসএফ জওয়ানেরা বহুবার আক্রান্ত হয়েছিলেন। সীমান্তের মানুষজন জানালেন, সংখ্যায় বেশি না হলেও কয়েকটি করে গরু এ দেশ থেকে ও দেশে মাঝে মধ্যেই পাচার হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন