(বাঁ দিকে) নামখানা ব্লকের ক্লার্ক অভিজিৎ পাত্র এবং সমবায় দফতরের ইন্সপেক্টর সুদীপ্ত বিশ্বাস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কাকদ্বীপের পর এ বার নামখানা। ভোটার তালিকায় গরমিলের অভিযোগে দুই সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর। দিন কয়েক আগেই ভোটার তালিকা তৈরিতে একাধিক অনিয়ম, শতাধিক ভুয়ো নাম তোলা এবং বৈধ নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করা হয়েছিল কাকদ্বীপ মহকুমা নির্বাচন কমিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজার অরুণ গড়াইকে। এ বার সেই একই জেলায় আবার ভোটার তালিকায় গরমিলের অভিযোগ উঠল।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লকেই কাজ করেন ওই দুই অভিযুক্ত। এক জন ক্লার্ক এবং অপর জন সমবায় দফতরের ইন্সপেক্টর। অভিযোগ, দু’জনেই নামখানা বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন!
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, নামখানা এবং কাকদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভোটার তালিকা সংশোধনে গরমিলের তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। সেই ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করছে নির্বাচন কমিশন। প্রশাসন সূত্রে খবর, ভোটার তালিকায় ভুয়ো নাম সংযোজন, মৃত ভোটারদের নাম না কাটানো বা ঠিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর স্পষ্ট করেছে, ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় আরও কড়া নজরদারি চালানো হবে। শুধু তা-ই নয়, তালিকা সংশোধনের কাজে যুক্ত কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং তাঁদের উপর নজরদারি বৃদ্ধি নিয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে। একই জেলায় পর পর বেনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে এল। অভিযুক্তেরা হলেন নামখানা ব্লকের ক্লার্ক অভিজিৎ পাত্র এবং সমবায় দফতরের ইন্সপেক্টর সুদীপ্ত বিশ্বাস। এই ঘটনায় জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযুক্ত দুই সরকারি কর্মীর ভূমিকা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
দিন কয়েক আগেই অরুণের নাম প্রকাশ্যে আসার পরই শোরগোল পড়ে যায়। অরুণ কাকদ্বীপের যুগ্ম বিডিও স্বপনকুমার হালদারের লগ-ইন আইডি অবৈধ ভাবে ব্যবহার করে শতাধিক ভুয়ো ভোটারের নাম তালিকায় তোলেন। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে তিনি বহু বৈধ নামও তালিকা থেকে বাদ দেন। যুগ্ম বিডিওর ফোন নম্বর পাল্টে নিজের নম্বর ব্যবহার করেন, যাতে যাবতীয় যাচাই প্রক্রিয়া তাঁর হাত দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও বিজেপির দাবি, পুলিশ নয়, এই গরমিলের ঘটনায় সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক। সোমবারই নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে গিয়ে সেই দাবি জানিয়ে আসে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল। সেই আবহেই এ বার নামখানার ঘটনা প্রকাশ্যে এল।