জেনারেটরের ফিতেয় ওড়না জড়িয়ে মৃত্যু

মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা থানার হাঁসপুরে। মালতির বাড়ি গোপালনগরের শেরপুর। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাইঘাটার খেজুরতলায় পিসি কল্পনা দাসের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫৫
Share:

মালতি দাস

ইঞ্জিন ভ্যানে চেপে কালী প্রতিমা নিয়ে পিসির বাড়িতে যাচ্ছিলেন এক তরুণী। ভ্যানে ওই তরুণীর সঙ্গে আরও অনেকে ছিলেন। ভ্যানের উপরে বসানো ছিল জেনারেটর। তরুণীর গলার চাদর জড়িয়ে যায় জেনারেটরের ফিতের সঙ্গে। নিমেষে গলায় প্যাঁচ লেগে ধর-মুণ্ড আলাদা হয়ে যায় মালতি দাস (২৮) নামে ওই তরুণীর। দেহ ছিটকে পড়ে রাস্তায়। মুণ্ড তখনও লেগে জেনারেটরের ফিতের সঙ্গে। পাশে বসে থাকা লোকজন বুঝে ওঠার আগেই সব শেষ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা দেহ উদ্ধার করে। ভ্যানটি থানায় এনে মিস্ত্রি ডেকে বের করা হয় গলার উপরের অংশ।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা থানার হাঁসপুরে। মালতির বাড়ি গোপালনগরের শেরপুর। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাইঘাটার খেজুরতলায় পিসি কল্পনা দাসের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। রাতে পিসির বাড়িতে কালী পুজো ছিল। প্রতিমা আনতে বেরোন বাড়ির লোকজন।

মালতির মৃত্যুর খবর শুনে লোকজন বিস্মিত। বিশ্বাস হচ্ছে না, সন্ধ্যাবেলা যাকে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি থেকে বেরোতে দেখলেন, তাঁর এমন ভয়ঙ্কর পরিণতি কী ভাবে ঘটতে পারে!

Advertisement

বুধবার মালতিদেবীর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, পাড়া-প্রতিবেশীরা জড়ো হয়েছেন। বাবা রঘুনাথ দাস পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। উঠোনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন। সকাল পর্যন্ত তাঁকে মেয়ের মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। পরে জেনেছেন। বললেন, ‘‘চার ছেলেমেয়ের মধ্যে মালতি মেজো। স্বপ্ন ছিল, ওকে স্কুল শিক্ষক করব। সব শেষ হয়ে গেল।’’ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ করেছেন মালতি। অসমের শিলচর থেকে বিএড করেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শেষবার মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছিল বাবার। বলেছিলেন, সকালে ফিরবেন।

মালতিদেবী ইদানীং চাকরির জন্য লেখাপড়া করছিলেন। পিসির বাড়ি থেকে ফিরে বুধবার সকালে তাঁর স্থানীয় নাহটা এলাকায় একটি কলেজে শিক্ষকতার কাজের খোঁজে যাওয়ার কথা ছিল। মালতির মা অনিতাদেবী বার বার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। প্রতিবেশী মহিলারা তাকে শান্ত করছিলেন। সদ্য মেয়ে-হারা মা কোনও মতে বললেন, ‘‘বিয়ের কথা বললেই ও বলত, চাকরি পেয়ে তবেই বিয়ে করবে। সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।’’

এত কিছুর পরেও পুজো অবশ্য বন্ধ হয়নি মালতির মাসির বাড়িতে। তবে হঠাৎই বদলে গিয়েছে সেখানকার সব পরিবেশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন