কাটা-গাছ: এই এলাকাতেই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর হেলিপ্যাড। —নিজস্ব চিত্র
ঠাকুরনগরের চিকনপাড়া মৌজায় মূল্যবান গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে— এই মর্মে স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দা বুধবার বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
অভিযোগের সূত্রে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত সভা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কারণ, ওই অভিযোগে নির্দিষ্ট করে প্রধানমন্ত্রীর সভার কথা উল্লেখ না থাকলেও চিকনপাড়া মৌজাতেই প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সভার জন্য হেলিপ্যাড তৈরির কাজ চলছে।
অভিযোগকারীদের দাবি, গাছ কাটার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। কৃষিজমিতেই হেলিপ্যাড তৈরির কাজ জোরকদমে চলছে। সেখানে কোনও গাছই নেই। সেখানে নতুন করে রাস্তাও তৈরি হচ্ছে। মাঠের এক পাশে দু’টি গাছ কাটা পড়ে আছে। সরস্বতী বিশ্বাস নামে এক বৃদ্ধা বললেন, ‘‘আমাদের দু’টি কদম গাছ কাটা পড়েছে। দু’টি আম গাছের ডাল কাটা পড়েছে। তবে আমাদের অনুমতি নিয়েই এগুলি কাটা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আসবেন এটা তো আনন্দের বিষয়। তাই অনুমতি দিয়েছি।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা গাছ কাটার বিরুদ্ধে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী দমদম এয়ারপোর্টে নেমে সড়ক পথে ঠাকুরনগরে আসুন। গাছকাটা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।’’
‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘে’র আমন্ত্রণে ২ ফেব্রুয়ারি নরেন্দ্র মোদীর মতুয়াদের সভায় আসার কথা। সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর গাছ কাটার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘হেলিপ্যাড তৈরির জন্য কোনও গাছ কাটা হয়নি। এলাকার মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে ভাল ভাবে দেখবেন বলে নিজেরাই কিছু গাছের ডাল ছেঁটে ফেলেছেন।’’ তাঁর দাবি, ধর্মীয় সভায় প্রধানমন্ত্রীর আসা বানচাল করতে গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
গাছ কাটার অভিযোগের পিছনে বিজেপিও ষড়যন্ত্র দেখছে। দলের বারাসত জেলার সহ-সভাপতি বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘রাজ্যে বিজেপিকে তৃণমূল কোথাও সভা-মিছিল করতে দিতে চায় না। বাধা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীকেও ওরা ছাড়ছে না। মানুষ এর জবাব দেবেন।’’