Complaint Box

ঘর নিয়ে নালিশ জানাতে বিডিও অফিসে খাস বাক্স

সম্প্রতি আবাস যোজনার সমীক্ষা নিয়ে স্বরূপনগর, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি-সহ বিভিন্ন জায়গায় ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নির্মল বসু 

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৪০
Share:

আবাস যোজনায় ক্ষোভ-অভিযোগ লিখিত আকারে জানাতে বিডিও অফিসগুলিতে বসানো হচ্ছে বিশেষ বাক্স। ফাইল চিত্র।

আবাস যোজনায় ক্ষোভ-অভিযোগ লিখিত আকারে জানাতে বিডিও অফিসগুলিতে বসানো হচ্ছে বিশেষ বাক্স। বিরোধীদের অবশ্য কটাক্ষ, অভাব-অভিযোগ শুধু জমাই পড়বে, সুরাহা হবে না!

Advertisement

সম্প্রতি আবাস যোজনার সমীক্ষা নিয়ে স্বরূপনগর, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি-সহ বিভিন্ন জায়গায় ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল কর্মীদের কথা মতো অঙ্গনওয়াড়ি এবং আশাকর্মীরা আবাস যোজনার সমীক্ষা করেছেন বলে অভিযোগ। তৃণমূলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা অনেকে, যাঁদের পাকা বাড়ি আছে— তাঁদের নাম তালিকায় উঠলেও প্রকৃত প্রাপকেরা অনেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ। কাঁচা বাড়িতে বা প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে বাস করলেও আবাস যোজনার তালিকায় তাঁদের নাম ওঠেনি।

স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যে মিনাখাঁর চৈতল, চাঁপালি-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বঞ্চিত মানুষজন। সন্দেশখালি, হাড়োয়া, হিঙ্গলগঞ্জ-সহ বিভিন্ন ব্লকে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। বিক্ষোভ, প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে গত কয়েকদিনে। স্বরূপনগরে হুমকির ফলে এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী আত্মহত্যা করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের পক্ষে ক্ষোভ সামাল দিতে দিন কয়েক আগে ব্লক দফতরে অভিযোগ জমা নেওয়ার বাক্স চালু হয়েছে। সন্দেশখালি ১ ও ২, মিনাখাঁ, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ-সহ বিভিন্ন ব্লকে বসানো হয়েছে আবাস যোজনা সংক্রান্ত অভিযোগ নেওয়ার বাক্স। বসিরহাটের মহকুমাশাসক মৌসম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ব্লক দফতরে বাক্স বসানো হয়েছে।’’

মিনাখাঁর বাসিন্দা তথা ব্লক দফতরের কর্মী স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘মানুষের এত অভিযোগপত্র জমা হচ্ছে, দিনে ৫-৭ বার ভর্তি হওয়া বাক্স খালি করা হচ্ছে।’’ মানুষ যে ভাবে অভিযোগ জমা দিচ্ছেন তাতে চিন্তিত প্রশাসন।

সন্দেশখালি ১ বিডিও সুপ্রতিম আচার্য বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো অভিযোগ বক্স বসানো হয়েছে। এলাকার আবাস যোজনা থেকে বঞ্চিত মানুষ অভাব-অভিযোগের কথা লিখিত আকারে জানাতে পারবেন। ওই অভিযোগপত্র দেখে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’

সঞ্জয় মাহাতো, রুকশনা বিবি, তরুণ মণ্ডলদের মতো এলাকার অনেকে জানালেন, এর আগে পঞ্চায়েত প্রধানকে অনেকবার সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। তাতে কেউ কর্ণপাত করেনি। বিডিও অফিসে অভিযোগ বাক্স বসানোয় সুবিধা হল। সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমরা যে পলিথিনের ছাউনির নীচে বাস করি, তার ছবি তুলে ঘরের জন্য আবেদন করে বাক্সে জমা দিয়েছি।’’

এ প্রসঙ্গে মিনাখাঁর বিজেপি নেতা জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘চারিদিকে বঞ্চিত মানুষেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। এর ফলে সরকার চাপে পড়ে গিয়েছে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই এলাকার মানুষকে শান্ত করার জন্য এই একটা পন্থা অবলম্বন করেছে। বাক্সে অভিযোগপত্র জমা দিলে কী হবে? সরকার খতিয়েও দেখবে না। এটা শুধুমাত্র লোকদেখানো। তবে এলাকার মানুষের কাছে অনুরোধ করব, আপনারা বাক্সে অভিযোগ জমা দিন।’’

মিনাখাঁর বিধায়ক উষারানি মণ্ডল বলেন, ‘‘বিরোধীরা কোনও কাজ না করে কেবল মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। চিন্তা করতে হবে না, বাক্সে জমা পড়া সমস্ত অভিযোগ আধিকারিকেরা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন