হকারদের চোখ রাঙানি সহ্য করতে হয় যাত্রীদের

হকারদের দাপাদাপি আর জবরদখলে হারিয়ে যাচ্ছে শিয়ালদহ-দক্ষিণ শাখার ক্যানিং তালদি, ঘুটিয়ারিশরিফ স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের বেশির ভাগ অংশ।

Advertisement

সামসুল হুদা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৮:৪০
Share:

ঘিঞ্জি: ক্যানিং স্টেশন। নিজস্ব চিত্র

চা, চাউমিন, রোল, ফল, মাছ থেকে শুরু করে রয়েছে জামাকাপড়, পুরনো কাঠের আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্সের জিনিসের দোকান— দেখলে মনে হবে আস্ত একটি বাজার! এই বাজার পেরিয়ে ট্রেনে উঠতে নামতে গিয়ে কখনও গরম তাওয়ায় ছ্যাঁকা খাচ্ছে শিশু। আবার কোনও বয়স্করা হোঁচট খেয়ে উল্টে পড়ছেন।

Advertisement

অভিযোগ, হকারদের দাপাদাপি আর জবরদখলে হারিয়ে যাচ্ছে শিয়ালদহ-দক্ষিণ শাখার ক্যানিং তালদি, ঘুটিয়ারিশরিফ স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের বেশির ভাগ অংশ। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। আমরা বিভিন্ন স্টেশন ইতিমধ্যে পরিষ্কার করে দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে স্টেশনগুলি থেকে হকার সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্য স্টেশন থেকেও হকার সরিয়ে দেওয়া হবে।’’

যাত্রীদের অভিযোগ, এই হকার পেরিয়েই তাড়াহুড়ো করে যেতে দম বেরিয়ে যায়। দুর্ঘটনাও ঘটে। কখনও কেটলির গরম জল গায়ে পড়ে যায়। আবার কখনও হুমড়ি খেয়ে স্টেশনেই উল্টে পড়ে যান মানুষ। প্রতিবাদ করলে জোটে হকারদের চোখ রাঙানি। কটূ কথাও শুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগে ক্যানিং স্টেশনে ভিড়ের মধ্যে টাল সামলাতে না পেরে শিশু কোলে এক মহিলা পড়ে যান। গরম তাওয়ায় তাঁর শিশুর ছ্যাঁকা লাগে। মহিলা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হকারই ঝাঁঝিয়ে উঠে বলেন, ‘‘দেখে চলতে পারেন না?’’

Advertisement

ক্যানিং, তালদি, ঘুটিয়ারিশরিফ স্টেশনে এমন সমস্যার মুখোমুখি হন অনেক মানুষ। বিশেষ করে অফিস যাওয়া ও ফেরার সময়ে এই ঘটনাগুলি বেশি ঘটে। যাত্রীদের অভিযোগ, এই সব প্ল্যাটফর্মগুলিতে যাত্রী সুরক্ষা বলে কিছু নেই। সন্ধ্যা নামলেই স্টেশনগুলিতে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। পকেটমারি, চুরি লেগেই আছে। মাদক বিক্রি থেকে নেশা করা— সবই চলে বলে অভিযোগ। রেল পুলিশ সব জেনেও কোনও ব্যবস্থা নেয় না বলেও অভিযোগ যাত্রীদের।নিত্যযাত্রী মিনতি মণ্ডল, সইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘ট্রেনে ওঠানামা আমাদের কাছে এক রকম নরক যন্ত্রণা। ট্রেনে উঠতে গিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। পুরো প্ল্যাটফর্মগুলি চলে যাচ্ছে হকারদের দখলে। হকারদের চোখ রাঙানি আর সহ্য হয় না।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, রাজনৈতিক মদতে হকারদের এত বাড়বাড়ন্ত।

তবে রেল পুলিশ জানিয়েছে, সাদা পোশাকে পুলিশ সব সময়ে নজরদারি চালায়। আগের থেকে ঘুটিয়ারিশরিফ স্টেশনে মাদক বিক্রির পরিমাণও অনেক কমেছে। কেউ লুকিয়ে চুরিয়ে কিছু করলে তা আমরা খবর পেলেই ধরার চেষ্টা করা হয়। তবে হকারদের বিরুদ্ধে সেই ভাবে কেউ কোনও অভিযোগ করেনি।

জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি শৈবাল লাহিড়ি বলেন, ‘‘এটা সত্যিই বড় সমস্যা। যাত্রীদের অসুবিধার কথা ভেবে আমরা রেলকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু তাঁরা যাত্রীদের সুবিধার জন্য কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা আবার
রেলকে জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন