coronavirus

দেখা নেই ক্রেতার, অক্ষয় তৃতীয়া এ বার জৌলুসহীন

বেশিরভাগ জায়গায় অক্ষয় তৃতীয়ার আয়োজন হচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৬:২৯
Share:

মন্দা: খদ্দেরের দেখা নেই দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার একটি পোশাকের দোকানে। নিজস্ব চিত্র।

গত বছর করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে বাজার ছিল মন্দা। ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এ বছরের শুরুতে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশায় বুক বাঁধছিলেন তাঁরা। ভেবেছিলেন, অক্ষয় তৃতীয়াকে সামনে রেখে কিছু লাভের মুখ দেখবেন।

Advertisement

এ দিকে, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তীব্র হারে বাড়তে শুরু করেছে করোনা। মানুষ মারা যাচ্ছেন। রাজ্য সরকারের নির্দেশে দোকানপাট আংশিক সময়ের জন্য খোলা থাকলেও ক্রেতার ভিড় বিশেষ চোখে পড়ছে না। এ বার বেশিরভাগ জায়গায় অক্ষয় তৃতীয়ার আয়োজন হচ্ছে না। কোথাও নমো নমো করে কেবল পুজোটুকুই সারা হচ্ছে বলে জানালেন অনেক ব্যবসায়ী।

ব্যবসায়ীরা মূলত সারা বছর ক্রেতাদের ধারবাকিতে মালপত্র দেন। অক্ষয় তৃতীয়ায় ক্রেতাদের দোকানে নিমন্ত্রণ করেন। দোকানে পুজো হয়। ক্রেতারা দোকানে গিয়ে ধারবাকি শোধ করেন। দোকানিরা হাসিমুখে ক্রেতাদের হাতে মিষ্টির প্যাকেট উপহার তুলে দেন। বাজার মন্দা থাকায় দোকানিরা অনেকে ধারবাকিতে মালপত্র দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে ক্রেতাদের কাছ থেকে পাওয়া আদায়ের সম্ভাবনা নেই। তা ছাড়া, সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাতেও অনেকে অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন বলে জানিয়েছেন।

Advertisement

বসিরহাটের অক্ষয় তৃতীয়াও এ বার ম্লান। ব্যবসায়ীরা জানালেন, এই দিনে দোকানে পুজো হয় মূলত ধারের টাকা ঘরে তুলতে। কিন্তু গত বছর থেকে বাজার মন্দা। ফলে ধারে মালপত্র দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বসিরহাটের বস্ত্র ব্যবসায়ী পরিতোষ মণ্ডল, তপন দাসের কথায়, ‘‘করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর অক্ষয় তৃতীয়া করা সম্ভব হয়নি। এ বারও পরিস্থিতি এক। বাজারে ক্রেতা হয় না। টুকটাক বিক্রি যা হয় নগদে। ধারে দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। তাই অক্ষয় তৃতীয়া এ বার করা হচ্ছে না।’’ অনেক ব্যবসায়ী জানালেন, কোনও মন্দিরে গিয়ে অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো দিয়ে আসবেন।

ক্যানিং বাজারেও একই পরিস্থিতি। গত বছর করোনার প্রথম ঢেউ শুরু হওয়ায় লকডাউন চলেছিল। সে বারও দীর্ঘ দিন ধরে বাজার বন্ধ থাকায় ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছিল। এ বারও ঘটনা প্রায় একই। সরকারি নির্দেশ মেনে দিনে দু’বেলা মিলিয়ে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা দোকান খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এইটুকু সময়ে সে ভাবে ব্যবসা জমছে না বলেই দাবি করেছেন বেশিরভাগ ব্যবসায়ী। তাই অক্ষয় তৃতীয়ার আগে এ বারও তাঁরা যথেষ্ট বিমর্ষ।

ক্যানিংয়ের কাপড় ব্যবসায়ী সুধীর সাহা বলেন, ‘‘গত এক বছরের বেশি সময় ধরেই বাজার খারাপ। মাঝে দু’তিনটে মাস একটু ভাল হয়েছিল। কিন্তু এই করোনার প্রকোপে আবার একই অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে অক্ষয় তৃতীয়াও জৌলুষ হারিয়েছে।”

বনগাঁ মহকুমা এবং হাবড়াতেও পরিস্থিতি একই। ব্যবসায় মন্দা থাকায় অক্ষর তৃতীয়ার আয়োজন বেশিরভাগ ব্যবসায়ী বাতিল করেছেন। বনগাঁ শহরের সোনার দোকানের মালিক দিলীপ মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের দোকান দুপুর ১২-৩টে পর্যন্ত খোলা থাকছে। এ দিকে, আমাদের ক্রেতা মূলত মহিলারা। তাঁরা ওই সময়ে বাড়িতে রান্না-খাওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকেন। আসতে পারেন না। তা ছাড়া, সংক্রমণে ভয়ে লোকজন দোকানে আসা বন্ধ করেছেন। তা হলে আর কেনাকাটা হবে কী করে?’’

বিয়ের মরসুমে হাবড়ার কাপড়ের দোকানগুলিতে ক্রেতাদের ভিড়ে উপচে পড়ে। এ বার তা নেই। বিয়ের আয়োজনও ছোট হয়ে গিয়েছে। মানুষ কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement