Coronavirus

লকডাউনের জেরে সঙ্কটে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা  

ট্রলার মালিকেরা জানান, এক একটি নতুন ট্রলার তৈরি করতে প্রায় ৫০-৫৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়। ওই টাকা অনেক ট্রলার মালিকের কাছে থাকে না। ফলে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে কাঠ কিনে ট্রলার করেন তাঁরা।

Advertisement

দিলীপ নস্কর  

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ০২:০৯
Share:

সারি-দিয়ে: দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রলার। কাকদ্বীপে। নিজস্ব চিত্র

লকডাউনের জেরে কাজে যেতে পারছেন না মৎস্যজীবীরা। এ দিকে, এসে পড়ছে ইলিশের মরসুম। এখনও পর্যন্ত জাল ও ট্রলার মেরামত করেননি মৎস্যজীবীরা।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফি বছর জুন মাসের ১৫ তারিখ থেকে গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরার মরসুম শুরু হয়। গভীর সমুদ্রে যাওয়ার জন্য মৎস্যজীবীরা মাস তিনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নেন। নতুন ট্রলার তৈরি করেন। পুরনো ট্রলার মেরামত করেন। ইলিশ ধরার জাল সারাই করেন এবং নতুন জাল কেনেন। নতুন ট্রলার তৈরির ক্ষেত্রে যে কাঠের প্রয়োজন হয় তা সংগ্রহ করতে যেতে হয় কলকাতার কাঠের আড়তে। নতুন জালও আনতে হয় সেখান থেকে। কিন্তু গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় সে সব কাজ করা যায়নি।

ট্রলার মালিকেরা জানান, এক একটি নতুন ট্রলার তৈরি করতে প্রায় ৫০-৫৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়। ওই টাকা অনেক ট্রলার মালিকের কাছে থাকে না। ফলে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে কাঠ কিনে ট্রলার করেন তাঁরা। গত বছর বেশ কিছু ট্রলার গভীর সমুদ্রে গিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সে সব ট্রলারএ সারানো হয়নি এখনও।

Advertisement

ফি বছর কাকদ্বীপ মহকুমায় সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা এবং ডায়মন্ড হারবার মহকুমা এলাকা থেকে দেড়-দু’হাজার ট্রলার গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। তাতে প্রায় ২ লক্ষ মৎস্যজীবীর জীবনযাপন চলে। মৎস্যজীবীরা জানান, সমুদ্রে যাওয়ার আগে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ জাল সারানোর কাজ করেন। নদী লাগোয়া এলাকায় তৈরি হয় নতুন নতুন ট্রলার। কিন্তু এ বার সব কাজ বন্ধ। লকডাউন যদি এর মাঝে উঠেও যায়, তা হলেও এ মরসুমে সব ট্রলার সমুদ্রে যেতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

গত মরসুমে দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। মাছও ভাল মেলেনি। এ বারও আরও ক্ষতির আশঙ্কায় ভুগছেন মৎস্যজীবীরা।

এখানকার মাছ যায় চিন, জাপান ও সিঙ্গাপুর-সহ বিভিন্ন দেশে। তাতে বড় অঙ্কের টাকাও উপার্জন হত। কি‌ন্তু এ বার সে পথও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বিজন মাইতি বলেন, ‘‘টানা লকডাউনের জেরে পরিবহণ বন্ধ থাকায় নতুন ট্রলার তৈরি, জাল কেনা , কিছুই করা যায়নি। হুগলি, নদিয়া, বর্ধমান থেকে মিস্ত্রি আসেন নতুন ট্রলার তৈরি করতে। তাঁরাও আসতে পারেননি। ফলে এ বার সমুদ্রে যাওয়া অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে গেল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement