Coronavirus

পণ্য রফতানি চালু করতে বৈঠক হল পেট্রাপোলে

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পেট্রাপোল  বন্দর এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রায় দু’হাজার পণ্য ভর্তি ট্রাক আটকে আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫১
Share:

ফাইল চিত্র।

পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে অত্যাবশ্যক পণ্য রফতানির কাজ শুরু করতে পদক্ষেপ করা হল। ওই উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার পেট্রাপোলে বৈঠক করলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার, রাজ্য সরকার নিযুক্ত উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নোডাল অফিসার সঞ্জয়কুমার থাড়ে, বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়। ছিলেন শুল্ক দফতর ও বিএসএফের কর্তারা। বৈঠকে ডাকা হয়েছিল ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠনের প্রতিনিধি এবং পণ্য রফতানি ও আমদানিকারী সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পেট্রাপোল বন্দর এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রায় দু’হাজার পণ্য ভর্তি ট্রাক আটকে আছে। ওই সব পণ্য রফতানির জন্য বাংলাদেশে যাওয়ার কথা। ট্রাকে মাছের খাবার তৈরির উপকরণ, পাটবীজের মতো অত্যাবশ্যক পণ্যও রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে আটকে থাকা পণ্য কী ভাবে দ্রুত বাংলাদেশে পাঠানো সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আটকে থাকা ট্রাকগুলির মধ্যে প্রায় ৪০০টি ট্রাকে অত্যাবশ্যক পণ্য রয়েছে বলে কেন্দ্রের দেওয়া তালিকা থেকে জানতে পেরেছি। বৈঠকে প্রস্তাব দিয়েছি, অত্যাবশ্যক পণ্য নিয়ে ট্রাক চালকেরা যাবতীয় সুরক্ষা নিয়ে বেনাপোল যাক। দিনের দিন সেখানে পণ্য খালি করে চলে আসুন। চালকেরা ফিরে এলে তাঁদের যেন ১৪ দিনের কোয়রান্টিনে পাঠানো না হয়।’’ খানিকটা অন্য পরামর্শ দিয়েছেন পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘বৈঠকে বলেছি, সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এ দেশের ট্রাক থেকে বাংলাদেশের ট্রাকে পণ্য তুলে নেওয়া হোক।’’ যদিও জিরো পয়েন্টে পণ্য ওঠানো-নামানো কাজের পরিকাঠামো কতটা রয়েছে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট মহল।

সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে আলোচিত সমস্ত প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তারপরে দু’দেশের মধ্যে আলোচনায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কী ভাবে বাণিজ্যের কাজ শুরু করা যায়, তা নিয়ে এ দিন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিষয়টিও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।’’ নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ সীমান্তের সমস্ত বাণিজ্য করিডর দিয়ে অত্যাবশ্যক পণ্য চলাচল শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তার প্রেক্ষিতে এ দিনের বৈঠক বলে জানা গিয়েছে। রফতানিকারীরা আগেই অত্যাবশ্যক পণ্য রফতানির দাবি তুলেছেন। আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আটকে থাকা ট্রাকের মধ্যে মালপত্র নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিন ট্রাক আটকে থাকায় ট্রাকগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখনই ট্রাকগুলি বেনাপোলে পাঠাতে না পারলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পরবর্তী সময়ে তা নিতে অস্বীকার করতে পারেন। তা ছাড়া, পার্কিংয়ে ট্রাক থাকায় রোজ ট্রাক প্রতি ফি বাবদ ১৪০০-১৫০০ টাকা করে রফতানিকারীদের দিতে হবে।

Advertisement

লকডাউন পরিস্থিতিতে বাণিজ্য বন্ধের কেন্দ্রের কোনও নির্দেশ ছিল না। কেন্দ্রের লকডাউন নির্দেশিকায় সীমান্ত দিয়ে অত্যাবশ্যক পণ্যের যাতায়াত চালু রাখার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে কার্যত বন্ধ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দাবি, রাজ্য সরকার কোনও রকম আইনি বিজ্ঞপ্তি জারি না করে একতরফা সীমান্ত বন্ধ করেছে। প্রশাসনের যুক্তি ছিল, সীমান্তের ও পারে বাংলাদেশের জেলাগুলিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। বাণিজ্য চালু থাকলে এ দেশের ট্রাক চালকদের বাংলাদেশে পণ্য খালি করতে গিয়ে কয়েক দিন থাকতে হবে। কোনও ভাবে চালক সংক্রামিত হলে এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়বে। বিষয়টির গুরুত্ব উড়িয়ে দেওয়া যায় না। জটিলতা কাটিয়ে উঠে কবে ফের রফতানি স্বাভাবিক হবে সে দিকেই তাকিয়ে রফতানিকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement