বাড়িতে রেখে চিকিৎসায় সাফল্য গাইঘাটায় 

করোনা আক্রান্তদের বাড়িতেই  চিকিৎসা করে সুস্থ করার কাজে দিশা দেখাচ্ছে গাইঘাটা ব্লক স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র 

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৫:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা আক্রান্তদের বাড়িতেই চিকিৎসা করে সুস্থ করার কাজে দিশা দেখাচ্ছে গাইঘাটা ব্লক স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত গাইঘাটায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০। তার মধ্যে ৩০ জনকেই বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানো হয়েছে বা এখনও হচ্ছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুজন গায়েন বলেন, ‘‘বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানো ৩০ জন রোগীর মধ্যে ২১ জন ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন। বাকি ৯ জনের চিকিৎসা চলছে। তাঁরাও এখন সুস্থ।’’ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নির্দেশে স্পষ্ট বলা আছে, উপসর্গ না থাকা করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে। সম্প্রতি অশোকনগর থানার ভুরকুন্ডা পঞ্চায়েত এলাকায় করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন এক যুবক। প্রশাসনের তরফে তাঁকে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য বাড়িতে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছিল। যুবক জানিয়েছিলেন, তাঁর উপসর্গ নেই। ফলে তিনি হাসপাতালে যাবেন না। গ্রামবাসীর একাংশের দাবি ছিল, যুবককে বাড়িতে রাখা যাবে না। গ্রামের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পথ অবরোধ, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য যুবককে বাড়ি রেখেই চিকিৎসা করা হয়। স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষেত্রে অবশ্য গ্রামবাসীর চাপে উপসর্গ না থাকা রোগীদের কোভিড হাসপাতালে পাঠাতে হচ্ছে। তা ছাড়া, হোম আইসোলেশনে রেখে অনেকেরই চিকিৎসার সুবিধা বাড়িতে থাকে না। কোনও ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের বাড়িতে রাখছেন না। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘উপসর্গ না থাকলেও পরবর্তী সময়ে রোগীর অবস্থা খারাপ হতে পারে। সে সমস্ত রোগীকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানো ঝুঁকির।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উপসর্গ না থাকা রোগীদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে। সরকারি ওই নির্দেশের পরেই গাইঘাটা ব্লক স্বাস্থ্য দফতর পদক্ষেপ করে। ২৯ মে প্রথম এক করোনা আক্রান্ত রোগীকে বাড়িতে হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা শুরু করা হয়। তবে প্রথম দিকে কাজটা কঠিন ছিল। পরিবারের লোকজন গ্রামবাসীকে বোঝাতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়। ব্লক প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা সকলকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। গ্রামবাসীকে বোঝানো হয়, উপসর্গ না থাকা রোগীদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানোর মধ্যে ঝুঁকি নেই। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পর পর কয়েকজন রোগী বাড়িতে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হওয়ার পরে এখন অবশ্য গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভ অনেক কমে গিয়েছে। রোগীরাও বুঝতে পারছেন, বাড়িতেও সঠিক চিকিৎসা সম্ভব। সুজন বলেন, ‘‘বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করা যাবে না, মানুষের মধ্যে থেকে এই ভ্রান্ত ধারণা এখন অনেকটাই কাটিয়ে তুলতে পেরেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement