ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু যুগলের

স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হল যুবকের

এক রত্তি মেয়ের সামনেই ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল বাবা-মায়ের।শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের ভ্যাবলা হল্ট স্টেশনের কাছে ৩৮ নম্বর রেল গেটে। রেল পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দম্পতির নাম গফুর গাজি (২৭) এবং হাসিনা বিবি (২৪)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০১
Share:

এক রত্তি মেয়ের সামনেই ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল বাবা-মায়ের।

Advertisement

শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের ভ্যাবলা হল্ট স্টেশনের কাছে ৩৮ নম্বর রেল গেটে। রেল পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দম্পতির নাম গফুর গাজি (২৭) এবং হাসিনা বিবি (২৪)।

পুলিশ জানিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে অশান্তি করে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন হাসিনা। তাঁকে বাঁচাতে যান গফুর। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ট্রেনের ধাক্কায় দু’জনেরই হয়। চোখের সামনে বাবা-মায়ের মৃত্যু দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে চার বছরের মেয়ে আসমা। প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের ঘটনাস্থলে ডেকে আনে ওই শিশু। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ দু’টি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠায়।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার রেল লাইনের ধারে বাড়ি গফুরের। হাইব্রিড মাগুর মাছের ব্যবসর সঙ্গে জড়িত গফুর। হাসিনা স্থানীয় একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। এ দিন হাসিনার পরীক্ষা ছিল। সকালে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার পর কিছু না খেয়েই পরীক্ষা দিতে যান হাসিনা। সন্ধ্যায় স্বামী বাড়ি ফিরলে ফের তাঁদের বচসা বাধে। সে সময়ে গফুর তাঁকে মারধরও করে বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানায়, এরপরেই রাত ১০টা নাগাদ ডাউন হাসনাবাদ লোকালের সামনে ঝাঁপ দেন হাসিনা। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে আসে রেল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর রেল পুলিশ জানিয়েছে, রাগের মাথায় স্ত্রীকে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিতে দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারেননি গফুর। তিনিও লাইনের উপর ঝাঁপিয়ে স্ত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ট্রেন এসে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় হাসিনার দেহ। ট্রেনের ধাক্কায় খানিকটা দূরে ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয় গফুরের।

আসমা জানায়, এ দিন সন্ধ্যা থেকেই বাবা-মায়ের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিল। রাত বাড়লে তা বড় আকার নেয়। একটা সময়ে রাগের মাথায় বাবা মাকে মারেন। এরপরেই ট্রেনের শব্দ পেয়ে মা ঘর থেকে বেরিয়ে যান। পিছু নেন বাবাও। চোখের সামনে বাবা মাকে ট্রেনের তলায় চলে যেতে দেখে আসমা। এরপরেই পাশের এক আত্মীয়ের বাড়িতে যায় সে। গফুরের মা মনোয়ারা বিবি বলেন, ‘‘আমাদের পাকা বাড়ি থাকতেও ছেলে-বৌমা জেদ করে লাইনের ধারে ঝুপড়িতে থাকত। এতো বড় একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মেয়ের কথা মনে পড়ল না ওঁদের।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। কিন্তু এই পরিণতি হবে তা কোনও দিন স্বপ্নেও কেউ ভাবেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন