মাকে মেরে ফেলবে, মামাকে বলল নিশা

ঘটনাটি অশোকনগর থানার ২ নম্বর খেলার মাঠ এলাকার। সুমিতাদেবীর বাবা গোপাল চট্টোপাধ্যায় অশোকনগর থানায় মেয়ের স্বামী অমল দাস, শাশুড়ি বাসনা দাস, জা রুমা দাস-সহ পাঁচজনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০১:৩৫
Share:

আতঙ্কে: নিশা দাস। নিজস্ব চিত্র

মায়ের চিৎকার শুনে ছুটে এসে মেয়ে দেখে, রান্নার ঘরের সামনে উঠোনে মাকে মাটিতে ফেলে বাবা-ঠাকুমা, পিসি-সহ কয়েকজন মারধর করছে। জ্যারিকেন থেকে গায়ে কেরোসিন তেল ঢালার চেষ্টা করছে।

Advertisement

মঙ্গলবার তখন বিকেল সাড়ে ৫টা। দশম শ্রেণির ছাত্রী নিশা দাস গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাবে বলে বেরোচ্ছিল।

উদভ্রান্তের মতো অবস্থা তখন নিশার। কাঁদতে কাঁদতে কী করবে বুঝে উঠতে না পেরে বাড়ির ফোন থেকে ফোন করে মামাকে। দেড় কিলোমিটার দূরে তাঁর বাড়ি। দাদু-মামারা দ্রুত চলে আসেন। নিশার মা সুমিতাদেবীকে তাঁরা উদ্ধার করে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

Advertisement

ঘটনাটি অশোকনগর থানার ২ নম্বর খেলার মাঠ এলাকার। সুমিতাদেবীর বাবা গোপাল চট্টোপাধ্যায় অশোকনগর থানায় মেয়ের স্বামী অমল দাস, শাশুড়ি বাসনা দাস, জা রুমা দাস-সহ পাঁচজনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর স্বীমাকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সতেরো আগে সুমিতাদেবীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অমলের। সুমিতাদেবীর বাপের বাড়ির অভিযোগ, বিয়েতে নগদ টাকা, সোনায় গয়না, আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আরও পণের দাবিতে মেয়ের উপরে অত্যাচার চলত।

গোপালবাবু জানান, সাধ্য মতো অনেক কিছুই তাঁরা দিয়েছেন। তার পরেও দাবি মিটছিল না সুমিতার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। মেয়েকে মারধরও করা হত। অমল প্রায়ই মদ খেয়ে হুজ্জুত করত। বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে দাঁড়িয়ে নিশা বলে, ‘‘মাকে বাবা- ঠাকুমা-পিসিরা প্রায়ই মারে। গত কাল ওরা হয় তো মাকে মেরেই ফেলত।’’ হাসপাতালে শুয়ে সুমিতাদেবীর চোখে জল। কোনও মতে বললেন, ‘‘মেয়ের জন্যই বেঁচে গেলাম।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement