জমি আদান-প্রদান করে সম্প্রীতির বার্তা দিল দেগঙ্গা

সম্প্রতি বসিরহাটের গোলমাল এখানকার মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছে। এলাকায় যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায় তার জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এখন এলাকা সামলাচ্ছেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০০:৩০
Share:

উৎসব: শফিকদের দেওয়া জমিতে পুজো করছেন সাবিত্রিরা।

পুজো পার্বণের অনুষ্ঠানের জন্য জমি দিলেন সবেজান বিবি, রঙ্গিলা বিবি, শফিক গাজিরা।

Advertisement

অন্য দিকে আবার রাস্তা করার জন্য জমি দিলেন সন্ধ্যা গাইন, সাবিত্রী মণ্ডল, শশবিন্দু মণ্ডলরা।

বুধবার দেগঙ্গা রেজিস্ট্রি অফিসে সরকারি ভাবে হয়ে গেল একে অপরের জমি-হস্তান্তর। সকলে একসঙ্গে আনন্দ করার জন্যই জমি আদানপ্রদান করা হল বলে গ্রামবাসীরা জানান।

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরে দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের জুয়ারিয়া গ্রামের ওই চার শতক জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল দুই পক্ষের মধ্যে। কিন্তু এ দিন তার অবসান ঘটল। রেজিস্ট্রির পরে সবেজান বিবি, রঙ্গিলা বিবিরা বলেন, ‘‘মারামারি করে কোনও লাভ হয় না। একসঙ্গে থাকলে অনেক সমস্যারই সমাধান হয়।’’ অন্য দিকে, সন্ধ্যা গাইন, সাবিত্রী মণ্ডলরা বলেন, ‘‘সবচেয়ে আনন্দের হল, এ বার থেকে উৎসবে দুই সম্প্রদায়ের মানুষই আনন্দ করবে।’’


সবেজান, রঙ্গিলাদের যাতায়াতের জন্য জমি দিলেন শশবিন্দুরা।

সম্প্রতি বসিরহাটের গোলমাল এখানকার মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছে। এলাকায় যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায় তার জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এখন এলাকা সামলাচ্ছেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ। দিন কয়েক আগে দু’পক্ষের মানুষ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন যে, মাঠ আর রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদেরও অবসান হওয়া দরকার। সেইমতো বুধবার দেগঙ্গা রেজিস্ট্রি অফিসে উৎসবের জন্য ৪ শতক জমির মাঠটি কাগজে কলমে সাবিত্রী, সন্ধ্যা, শশবিন্দুদের হাতে তুলে দেন শফিক গাজিরা। আবার সবেজান বিবি, রঙ্গিলা বিবি, শফিক গাজিদের যাতায়াতের পথের জন্য ২ শতক জমি ছেড়ে দেন শশবিন্দু মণ্ডলরাও।

এ দিন এই আদান-প্রদানের পরে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন দু’পক্ষই। এ দিন চাঁপাতলার উপপ্রধান জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর ধরে এই জমি ও ওই রাস্তা নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে নানা ঝুট-ঝামেলা লেগেছিল। আজকে সকলে একজোট হয়ে যেটা করলেন তা আনন্দের। গর্বেরও বিষয়।’’

ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন