হিমাদ্রি পুরকাইত। —নিজস্ব চিত্র।
সকাল থেকে বার বার ফোন করছেন বাবা-মা। কিন্তু পুত্রের ফোন বন্ধ। শনিবার রাতের পর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি দক্ষিণ ২৪ পরগনার পারুলিয়া কোস্টাল থানার দক্ষিণ কামারপোলের বাসিন্দা শুক্লা পুরকাইত! দার্জিলিঙের সোনাদায় কাজে গিয়েছেন তাঁর পুত্র হিমাদ্রি। কিন্তু এক রাতের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দার্জিলিঙে তিনি কী অবস্থায় আছেন, তা জানতে পারছে না হিমাদ্রির পরিবার। ‘নিখোঁজ’ হিমাদ্রিকে নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা।
পরিবার সূত্রে খবর, ভ্রমণের নেশায় প্রায়ই বেরিয়ে পড়তেন হিমাদ্রি। গত মাসে তিনি দার্জিলিং যান। একটি হোম স্টে-তে কোনও কাজ নিয়েই যান সোনাদায়। প্রতি দিন বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতেন ফোনে। কিন্তু রবিবার সকাল থেকে ফোন বন্ধ তাঁর। বার বার চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। কোথায় গেলেন হিমাদ্রি, কেমন আছেন? সেই চিন্তায় রয়েছে পরিবার।
শুক্লা জানান, শনিবার রাত ১০টায় শেষ বার হিমাদ্রির সঙ্গে কথা হয়। পুত্রের থেকেই দার্জিলিঙে বৃষ্টির খবর জানতে পারেন পরিবারের লোকেরা। জানতে চান, বাড়ির সকলের খাওয়া হয়েছে কি না। তিনিও জানান তাঁর রাতের খাওয়া হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির কথা শুনে উদ্বেগের মধ্যে পড়েন শুক্লা। হিমাদ্রিকে অন্যত্র চলে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি। কিন্তু হিমাদ্রি জানান, তিনি ঠিক আছেন।
তবে আদৌ হিমাদ্রি ঠিক আছেন কি না, তা জানে না পরিবার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের লোকজন পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেন বলে জানান হিমাদ্রির বাবা। আতঙ্কে রয়েছেন পরিবারের সকলে।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পঙে। তাতেই বিধ্বস্ত পাহাড়। বহু জায়গায় ধস নেমে রাস্তা বন্ধ। তিস্তার জল উঠে এসেছে জাতীয় সড়কের উপর। এখনও পর্যন্ত মোট ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে দার্জিলিং থেকে। অনেকে আহত। উত্তরবঙ্গের বিপর্যয়ে বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁদের নিরাপদে বাড়ি ফেরানোর বন্দোবস্ত করবে রাজ্য সরকার। আপাতত কেউ যেন ফেরার জন্য তাড়াহুড়ো না করেন। উদ্ধারকার্যে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, সেনাও।