প্রতীকী ছবি।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে স্বামীর। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জ্বরে ভুগে মৃত্যু হয় শাশুড়ির। ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে আতান্তরে পড়েন গৃহবধূ।
ঘটনাটি ভাঙড় ২ ব্লকের বামনঘাটা পঞ্চায়েতের চচ্চড়িয়া গ্রামের। রবিবার সকালে ওই বাড়িতে যান ভাঙড় ২ বিডিও কৌশিককুমার মাইতি ও কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার আইসি স্বরূপকান্তি পাহাড়ি। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। আইসি নগদ টাকা দেন।
কৌশিক বলেন, ‘‘ওই মহিলা যাতে বিধবা ভাতা সহ অন্যান্য সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা পান, তার ব্যবস্থা করব।’’
নিউটাউনের একটি শপিংমলে সাফাইকর্মীর কাজ করতেন ওই যুবক। দিন কয়েক আগে জ্বর, সর্দি-কাশি শুরু হয়। আর্থিক সমস্যার কারণে ঠিক মতো চিকিৎসা করাতে পারেননি বলে পরিবারের দাবি। বাড়িতেই ছিলেন। পরে আশাকর্মীদের সহযোগিতায় ভাঙড়ের জিরানগাছা ব্লক হাসপাতলে নিয়ে গিয়ে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়। লালারস পরীক্ষায় করানো ধরা পড়ে।
বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সন্ধ্যার পরে মারা যান যুবক।
ছেলের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন মা। তাঁরও জ্বর আসে। শনিবার সকালে তাঁকেও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই মারা যান ওই বৃদ্ধা। তাঁর লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।
সদ্য স্বামীহারা তরুণী বলেন, ‘‘স্বামীর সামান্য আয়ে কোনও রকমে দিন চলত। ছোট দুই বাচ্চা নিয়ে কী করব, বুঝতে পারছি না।’’ পড়শিরা অবশ্য পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওই যুবকের বড় ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।
আইসি বলেন, ‘‘ছেলেটির পড়াশোনার যাতে সমস্যা না হয়, তা আমরা দেখব। থানার পক্ষ থেকে বই, খাতা, পেন কিনে দেওয়া থেকে শুরু করে স্কুলে ভর্তির সব ব্যবস্থা করা হবে।’’
ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। সরকারি নিয়ম মেনে সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে পরিবারের পাশে থেকে সব রকমের সহযোগিতা করব।’’