হেলমেট পরাতে গোপালনগরে মঞ্চস্থ ‘হেলমেট’

মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ কমসূচি ঘোষণার আগে থেকেই বনগাঁ মহকুমায় বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক প্রচারের আয়োজন করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, হেলমেট ছাড়া বাইক চালকদের বিরুদ্ধে নিয়মিত চলছে ধড়পাকড়। মানুষের মধ্যে হেলমেট পরার প্রবণতা বাড়াতে কখনও গোলাপ ফুল দেওয়া হয়েছে। আবার কখনও স্কুল ছাত্রীদের দিয়ে রাখি পরিয়ে হেলমেটের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এতকিছুর পরেও সব মানুষ সচেতন হচ্ছে না বলে পুলিশের দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ০০:০৪
Share:

মুহূর্ত: হেলমেট নাটক। নিজস্ব চিত্র।

দৃশ্য ১: নতুন বিয়ের পর ছেলে বৌকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাবেন। বেরোনোর আগে মা অনুরোধ করছেন হেলমেট পড়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ছেলে কোনও কথা না শুনেই বেরিয়ে গেলেন।

Advertisement

দৃশ্য ২: পথ দুর্ঘটনায় ছেলে ও বৌমা দু’জনেরই মৃত্যু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়িতে খবর পৌঁছয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন।

দৃশ্য ৩: মৃতদেহ ছুঁয়ে ছেলের বাবার শপথ, পেনশনের টাকায় তিনি হেলমেট কিনে বাইক চালকদের মধ্যে বিতরণ করবেন।

Advertisement

রবিবার পুলিশের পক্ষ থেকে গোপালনগরের বিভূতিভূষণ মেমোরিয়াল পাবলিক লাইব্রেরিতে এই ‘হেলমেট’ নাটকটির আয়োজন করা হয়েছিল। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেই পুলিশের এটি নয়া পদক্ষেপ। নাটকটি মঞ্চস্থ করে গাইঘাটার সৃজন নামে একটি সংস্থা। এসডিপিও অনিল রায়ের আশা, এই ধরনের কর্মসূচির ফলে হেলমেট পড়ার প্রবণতা বাড়ানো সম্ভব হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ কমসূচি ঘোষণার আগে থেকেই বনগাঁ মহকুমায় বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক প্রচারের আয়োজন করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, হেলমেট ছাড়া বাইক চালকদের বিরুদ্ধে নিয়মিত চলছে ধড়পাকড়। মানুষের মধ্যে হেলমেট পরার প্রবণতা বাড়াতে কখনও গোলাপ ফুল দেওয়া হয়েছে। আবার কখনও স্কুল ছাত্রীদের দিয়ে রাখি পরিয়ে হেলমেটের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এতকিছুর পরেও সব মানুষ সচেতন হচ্ছে না বলে পুলিশের দাবি।

শুধু তাই নয়, কিছু ক্ষেত্রে হেলমেট না পরলে বাইক আরোহীদের পুলিশ কড়া শাসনও করেছেন। এই ভয়ে হেলমেট পড়ে বাইক চালানোর অভ্যাস অনেকটাই বেড়েছে বলে দাবি পুলিশের। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘এখানে ষাট শতাংশ বাইক চালক এখন হেলমেট পরে বাইক চালাচ্ছেন। এই ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হেলমেট পরার প্রবণতা আরও বাড়বে।’’

তবে বাস্তব চিত্র তা নয় বলে দাবি সাধারণ মানুষের। কারণ রাস্তায় বেরোলে বেশির ভাগই হেলমেট ছাড়াই বাইক চালাতে দেখা যায় মানুষকে। কেউ কেউ আবার হেলমেট ঝুলিয়ে রেখেও বাইক চালায়।

বনগাঁ, বাগদা, গাইঘাটা, গোপালনগর এলাকার বিভিন্ন সড়কে গিয়ে দেখা গেল, হেলমেট ছাড়া রমরমিয়ে চলছে বাইক। যশোর রোড, বনগাঁ-চাকদহ, বনগাঁ-বাগদা রোডে বেশির ভাগ বাইক চালকদের মাথায় হেলমেট নেই। আবার কোথাও হেলমেট ছাড়াই এক বাইকে তিন জন যাচ্ছেন। যদিও বা বাইক চালকেরা হেলমেট পরেছেন। কিন্তু পিছনে বসা আরোহীরা কেউই হেলমেট পরেননি। বনগাঁ-চাকদহ সড়কে দেখা গেল, হেলমেট ছাড়া যুবকদের বাইক চালানোর প্রতিযোগিতা।

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি পথ দুর্ঘটনায় এক কলেজ ছাত্রী-সহ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। যাঁদের মাথায় হেলমেট থাকলে হয়তো তাঁদের এ ভাবে মরতে হতো না। অনিলবাবু বলেন, ‘‘বাইক চালকেরা দুর্ঘটনায় পড়লে মাথায় যদি হেলমেট থাকে তা হলে মৃত্যুর সম্ভবনা ৮০ শতাংশ কম। এটা চালকেদের বুঝতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement