পুর বোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়েছে তিন মাস আগে। কিন্তু চেম্বারে বসে প্রশাসনিক কাজকর্ম করে চলেছেন পানিহাটির পুরপ্রধান স্বপন ঘোষ। ওই পুরসভার প্রশাসক, ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসকের কাছে এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়।
সন্ময়বাবুর অভিযোগ, স্বপনবাবু পুরপ্রধানের ঘরে বসে কাজ করছেন। এমনকি, আগের তারিখে বিভিন্ন ফাইলে সইও করছেন। তিনি এখনও পুরসভার গাড়িটাও ব্যবহার করছেন। মহকুমাশাসককে লেখা চিঠিতে সন্ময়বাবু জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তাঁর হাতে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
এই অভিযোগ জানানো হয়েছে জেলাশাসকের কাছেও। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক আবুল কালাম আজাদ ইসলাম বলেন, ‘‘অভিযোগপত্র হাতে না এলেও আমি অভিযোগের কথা শুনেছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। অভিযোগের সত্যতা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ স্বপনবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পানিহাটি পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে গত ২০ অক্টোবর। সে দিনই প্রশাসক হিসেবে পুরসভার দায়িত্ব নেন মহকুমাশাসক। সন্ময়বাবুর অভিযোগ, জনপ্রতিনিধি হিসেবে মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও
পুরসভায় আসা বন্ধ করেননি স্বপনবাবু। তিনি নিয়মিত নিজের অফিসে বসে কাজ করতেন। তখনই বিষয়টি সন্ময়বাবু মহকুমাশাসককে জানান।
অভিযোগ পাওয়ার পরে মহকুমাশাসক আচমকা পুরসভায় হানা দেন। সেই সময়ে পুরপ্রধান নিজের চেম্বারে ছিলেন না। তবে তার পর থেকে তিনি পুরসভায় আসা বন্ধ করে দেন। কিছু দিন আর পুরসভায় দেখা যায়নি তাঁকে। অভিযোগ, মাসখানেক ধরে তিনি আবার নিয়মিত পুরসভায় আসছেন।
অভিযোগপত্রে সন্ময়বাবু লিখেছেন, স্বপনবাবু ছুটির দিন ছাড়া রোজই বিকেল তিনটে নাগাদ অফিসে এসে রাত আটটা পর্যন্ত নিজের পুরনো চেম্বারে বসছেন। তাঁর সঙ্গে থাকছেন এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান পারিষদও। তিনি এসে অফিস থেকে বিভিন্ন ফাইল তলব করছেন। সেই সব ফাইলে পুরনো তারিখ দিয়ে সইও করছেন।
অভিযোগ, অক্টোবরের একটি বিশেষ তারিখে প্রচুর নতুন নির্মাণের অনুমোদন পাশ হয়েছে। বেশ কিছু ফাইল স্বপনবাবু নিজের বাড়িতেও নিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘সব নাগরিকেরই পুরসভায় যাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু যে অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে করা হচ্ছে, তা সত্যি নয়। যে কেউ যে কোনও অভিযোগ করতেই পারেন।’’ তবে পুরসভার বেশ কিছু কর্মী জানিয়েছেন, স্বপনবাবু নিয়মিত পুরসভায় যাচ্ছেন।