প্রেমিকাকে জোর করে আটকে রেখেছে ভিন্‌ রাজ্যের দালাল!

মুর্শিদাবাদের যুবকের বুকে দোলা দিয়েছিল বনগাঁর মেয়ে। মাধ্যম ছিল, ফেসবুক। সেই সম্পর্ক ভার্চুয়াল রিয়ালিটির সীমা ছাড়িয়ে সংসার পাতার স্বপ্ন দেখায় দু’জনকে। ‘কলেজ যাচ্ছি’, বলে একদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন তরুণী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৭ ১০:০৫
Share:

মুর্শিদাবাদের যুবকের বুকে দোলা দিয়েছিল বনগাঁর মেয়ে। মাধ্যম ছিল, ফেসবুক। সেই সম্পর্ক ভার্চুয়াল রিয়ালিটির সীমা ছাড়িয়ে সংসার পাতার স্বপ্ন দেখায় দু’জনকে। ‘কলেজ যাচ্ছি’, বলে একদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন তরুণী। প্রেমিকের সঙ্গে পাড়ি দেন গুজরাতে।

Advertisement

স্বপ্ন ভাঙতে সময় নেয়নি। খারাপ লোকের খপ্পর থেকে প্রেমিকাকে রক্ষা করতে পারেননি যুবক। তাঁর দাবি, প্রেমিকাকে জোর করে আটকে রেখেছে ভিনরাজ্যের দালাল।

ফিরে এসেছেন মুর্শিদাবাদের ওই যুবক। তিনিই গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন মেয়ের বাড়িতে। তরুণীর পরিবার থানায় অভিযোগ করেছেন। আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। পুলিশ গুজরাতে গিয়েও খোঁজ পায়নি তরুণীর।

Advertisement

বনগাঁ থানার আইসি সতীনাথ চট্টরাজ জানান, বনগাঁ থানার পুলিশের একটি দল সম্প্রতি গুজরাটের নারদা থানা এলাকায় হানা দিয়েছিল। যুবকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি বাড়িতে তল্লাশিও চালায়। কিন্তু সেখানে তরুণীর হদিস মেলেনি। নারদা থানার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের পুলিশও তদন্তে সাহায্য করছে জানিয়েছে বনগাঁ থানা। অপহরণের অভিযোগে গুজরাতের ওই বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধেও আদালতে অভিযোগ জানিয়েছে মেয়ের বাড়ির লোকজন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোন ওই তরুণী। পর দিন সন্ধ্যায় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। এরপরেই ছাত্রীর বাড়ির লোক জানতে পারেন, মেয়েকে কেউ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে পালিয়েছে।

পরে তাঁরা অপহরণের অভিযোগও দায়ের করেন। পেশায় রাজমিস্ত্রি মেয়ের বাবা বলেন, ‘‘ওই যুবক নিজেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গোটা ঘটনা জানান। তাঁকে নিয়ে আমরা থানায় গিয়ে বিষয়টি জানাই।’’

ওই যুবক পুলিশকে জানান, সংসার পাতার ইচ্ছে ছিল প্রেমিকার সঙ্গে। কিন্তু হাতে কাজকর্ম ছিল না। বাড়ি থেকেও বিয়ে মানবে না বলে ভয় ছিল। সাতপাঁচ ভেবে তাঁরা গুজরাতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিঙের বাসিন্দা পরিচিত এক ব্যক্তি বলেছিল, গুজরাতে গেলে কাজ পাইয়ে দেবে। সেখানে দু’জন বাসা ভাড়া নেন।

কিন্তু যে লোকের মাধ্যমে দু’জন গেলেন ভিনরাজ্যে, তার তখন অন্য রূপ। মেয়েটিকে আটকে রেখে যুবককে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি যুবকের। তাঁর আশঙ্কা, প্রেমিকাকে বিক্রি করে অসৎ পথে নামাতে চায় ওই দালাল।

চোখ মুছতে মুছতে মেয়ের বাবা বলেন, ‘‘কোথায় কী অবস্থা আছে আমার মেয়েটা, কে জানে। কবে ফিরে আসবে, সেই অপেক্ষায় আছি। পুরনো কথা তুলে ওকে কিচ্ছু বলব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন