নদীতে কাঁকড়া ধরছিলেন জনা পাঁচেক মৎস্যজীবী। লাগোয়া জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে বাঘ। ঝাঁপিয়ে পড়ে এক মৎস্যজীবীর উপরে। বাকিরা লাঠি হাতে রুখে দাঁড়ান। ভয় পেয়ে পিছু হটে রয়্যালবেঙ্গল। শিকার ফেলে ঢুকে যায় জঙ্গলে। তবে কামড়ে জখম মৎস্যজীবীকে বাঁচানো যায়নি।
সোমবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের আজমলমারি রিজার্ভ ফরেস্টের ৪ নম্বর কম্পার্টমেন্টের বেনিফুলি খাল এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম কানাই ঘোষ (৪৭)।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কানাইয়ের বাড়ি মৈপীঠ কোস্টাল থানার মধ্য গুড়গুড়িয়া গ্রামে। নদীর মাছ, কাঁকড়া ধরেই সংসার চলে তাঁর। রবিবার রাতে চার সঙ্গীকে নিয়ে মাছ ধরতে বেরিয়েছিলেন। ভোরের দিকে জঙ্গল-লাগোয়া বেনিফুলির খালে পৌঁছন তাঁরা।
কানাইয়ের সঙ্গীরা জানিয়েছেন, ভোর তখন ৫টা। সবে আলো ফুটছে। কানাইরা নদীতে কাঁকড়া ধরছিলেন। তখনই জঙ্গল থেকে বাঘ বেরিয়ে আসে। ঝাঁপিয়ে পড়ে কানাইয়ের উপরে। কামড়ে ধরে ঘাড়। বাকিরা সকলেই কাছেই ছিলেন। লাঠি, বৈঠা উঁচিয়ে তেড়ে আসেন সকলে। সামনে গিয়ে বাঘের গায়ে লাঠি চালানোর সাহস করেননি কেউ। কিন্তু ক্রমাগত লাঠি উঁচিয়ে চিৎকার শুরু করেন।
এক সঙ্গে এত লোক দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যায় বাঘ। কিছুক্ষণ পরে শিকার ছেড়ে গজরাতে গজরাতে জঙ্গলে ঢুকে যায়। মুখ থেকে ফেলে যায় ‘শিকার’।
রক্তাক্ত কানাইকে উদ্ধার করেন তাঁর সঙ্গীরা। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। কানাইয়ের দেহ প্রথমে বনদফতরের কুলতলির বিটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদন জানান গ্রামবাসীরা। পরে মৈপীঠ কোস্টাল থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান বনদফতরের কুলতলি বিটের এক আধিকারিক।