তনুজা বিবি
জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে মারা যান তনুজা বিবি (৩৩)। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুরের দিকেই অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে এনেছিলেন পরিবারের লোকজন। ভর্তির মিনিট দশেকের মধ্যেই মারা যান তিনি। আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তনুজা। গর্ভস্থ সন্তানেরও মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল। তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘কার্ডিও রেসপিরেটরি ফেলিওর ইন কেস অফ প্রেগনেন্সি উইথ ফিভার শক অ্যান্ড এনএস-১ রিঅ্যাক্টিভ।’’
অশোকনগর থানার কোয়ালিপোতা গ্রামে থাকতেন তনুজা। বারাসত জেলা হাসপাতালে তাঁর রক্ত পরীক্ষায় ‘এনএস-১ পজিটিভ’ মিলেছিল।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে তনুজা জ্বরে পড়েন। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ খান। তাতে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দিন পাঁচেক সেখানে ভর্তি ছিলেন। দু’দিন জ্বর না থাকায় তাঁকে চিকিৎসকেরা ছুটি দেন বুধবার।
হিজলিয়ায় বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন তনুজা। সেখানেই বৃহস্পতিবার ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। দুপুরে জ্ঞান হারান। তারপরে আনা হয় হাসপাতালে।
তনুজার স্বামী সফিকুল পেশায় খেতমজুর। তাঁদের দুই মেয়ে রেশমা ও করিশ্মা। বয়স ১৪ ও ১২ বছর। চোখের জল সামলে কোনও রকমে রফিকুল বললেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে ছুটি না দিলে হয় তো স্ত্রীকে এ ভাবে মরতে হত না।’’
অশোকনগর স্টেট জেনারেল সুপার সোমনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘তনুজাদেবীর দু’দিন ধরে জ্বর ছিল না। শারীরিক ভাবেও সুস্থ ছিলেন। ওঁর বাড়ির লোকজনও নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছিলেন চিকিৎসকদের। সে কারণেই আমাকে জানিয়ে চিকিৎসক ওঁকে ছুটি দিয়েছিলেন।’’
এলাকাটি ভরকুন্ডা পঞ্চায়েতের অধীন। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ এখানে মাত্র একদিন মশা মারার তেল ও ধোঁয়া দেওয়া হয়েছে। অথচ, এলাকায় মশার উপদ্রব খুবই। অনেক মানুষ এখনও জ্বরে আক্রান্ত। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ‘‘আরও বেশি করে মশা না মারলে সমস্যা মিটবে না।’’