PIL

ম্যানগ্রোভ কেটে ভেড়ি তৈরির ঘটনায় হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা নিজস্ব সংবাদদাতা 

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বাসন্তী ব্লকের আনন্দবাদ ও কুমিরমারি মৌজায় হোগল নদীর চরের প্রায় ১৪০০ বিঘা জমির ম্যানগ্রোভ কেটে বেআইনি ভেড়ি তৈরি করা হয়। অভিযোগ, শাসক দলের বেশ কিছু নেতার মদতে ওই এলাকায় ম্যানগ্রোভ কেটে বেআইনি মেছোভেড়ি তৈরি হয়েছে।

Advertisement
ভাঙড় শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০১:৩৪
Share:

নিধন: সাফ হয়ে যাচ্ছে ম্যানগ্রোভ। ফাইল চিত্র।

নদীর চরের ম্যানগ্রোভ কেটে বেআইনি মেছোভেড়ি তৈরির ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা হল হাইকোর্টে। বাসন্তীর বাসিন্দা কালাম পৈলানের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে ওই মামলা দায়ের হয়েছে।

Advertisement

কালাম বলেন, ‘‘যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুন্দরবনকে বাঁচানোর জন্য ম্যানগ্রোভ লাগানোর কথা বলছেন, সেখানে কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ম্যানগ্রোভ কেটে ভেড়ি তৈরি করছে। সুন্দরবনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে চাইছে। প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ না হওয়ায় মামলা করা হয়েছে।’’ জনস্বার্থ মামলার পক্ষের আইনজীবী তমাল ঘোষ বলেন, ‘‘ম্যানগ্রোভ কেটে পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। আমার মক্কেল ওই বেআইনি কাজের প্রতিকার চেয়েছেন। সে কারণে জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে।’’

জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পাওয়ার পরেই প্রশাসনিক ভাবে বেশ কয়েকটি জেসিপি মেশিন আটক করেছিলাম। পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ফের যদি এ রকম কিছু হয়ে থাকে, তা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’

Advertisement

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বাসন্তী ব্লকের আনন্দবাদ ও কুমিরমারি মৌজায় হোগল নদীর চরের প্রায় ১৪০০ বিঘা জমির ম্যানগ্রোভ কেটে বেআইনি ভেড়ি তৈরি করা হয়। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বাসন্তীর জেলা পরিষদ সদস্য আবেদা পরভিনের স্বামী রফিকুল ইসলাম লস্কর, বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কামালউদ্দিন লস্কর, তৃণমূল নেতা আব্দুল মান্নান গাজি, নুর ইলাহি গাজি-সহ শাসক দলের বেশ কিছু নেতার মদতে ওই এলাকায় ম্যানগ্রোভ কেটে বেআইনি মেছোভেড়ি তৈরি হয়েছে।

বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা তৃণমূল নেতা জালাল মোল্লা বলেন, ‘‘দলেরই একাংশ ম্যানগ্রোভ কেটে বেআইনি ভেড়ি তৈরির সঙ্গে যুক্ত। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়ে কোনও কাজ হয়নি।’’

অভিযোগ উড়িয়ে আবেদা বলেন, ‘‘বাসন্তীর বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের ভেড়ি অনেক তৈরি হয়েছে। যেহেতু আমার স্বামী ওই এলাকার লিজে ভেড়ি নিয়েছেন, তাই তাঁকে বদনাম করতে এ সব বলা হচ্ছে।’’ পরভিনের স্বামী রফিকুলেরও দাবি, ‘রাজনৈতিক হিংসা’ চরিতার্থ করতে ফাঁসানো হচ্ছে। প্রাক্তন সেচমন্ত্রী তথা আরএসপির প্রাক্তন বিধায়ক সুভাষ নস্কর বলেন, ‘‘যে ভাবে জঙ্গল ধ্বংস করে বেআইনি ভেরি তৈরি হচ্ছে, তা খুবই অন্যায়। আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে এ বিষয়ে জানিয়েছি।’’ বিজেপির জেলা নেতা প্রতিশ্রুতি দেবনাথের অবশ্য দাবি, বাম আমলেও এ ভাবে লুটতরাজ হয়েছে। এই সরকারের আমলেও সকলে লুটেপুটে খাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের মধ্যে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে গন্ডগোল। বখরার টাকা না পেয়ে তাই ওদের দলের কিছু নেতা এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন