অনশন: ভাঙড়ে। ছবি: সামসুল হুদা
অনশন: ভাঙড়ে। ছবি: সামসুল হুদা
বকেয়া টাকা ও নায্য মজুরি না পেয়ে আমরণ অনশনে বসলেন ভাঙড়ের কিছু মৎস্যজীবী। বুধবার থেকে বামনঘাটার কাছে বাসন্তী হাইওয়ের ধারে অনশনে বসেছেন বামনঘাটা ১ নলবন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির ৬২ জন। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি কমিটি জোর করে ভেঙে দিয়ে শাসক দলের কিছু নেতা সমবায়ের টাকা আত্মসাৎ করছেন। সমবায় সমিতির মৎস্যজীবীদের বকেয়া টাকা ও মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। কিছু বলতে গেলে তাদের কমিটি থেকে, সমবায় থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। মিথ্যা মামলা করার ভয় দেখানো হচ্ছে।
২০০১ সালে ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার ভাঙড় ১ ব্লকের তাড়দহ অঞ্চলের ১ নম্বর নলবনের প্রায় ২০০ বিঘা সরকারি খাস জমিতে মেছোভেড়ি গড়ে ওঠে। বাম আমলে ভাঙড়ের বিভিন্ন অঞ্চলের গরিব মানুষকে নিয়ে ওই সমিতি গড়ে তৈরি হয়েছিল।
১০ জনের একটি সরকারি কমিটি হয়। এক সময়ে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে।
সম্প্রতি আরাবুল কোণঠাসা হতেই ওই সমবায়ে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে তৃণমূলেরই অন্য একটি গোষ্ঠী। অভিযোগ, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লার অনুগামী রাকেশ রায় চৌধুরী, নান্টু মণ্ডলরা আছেন এই ভাগে। এই গোষ্ঠীর লোকজনের বিরুদ্ধেই সরব আন্দোলনকারীরা।
তাঁদের বক্তব্য, সমিতি মেছোভেড়ি থেকে বছরে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা আয় করে। ওই চত্বরে প্রচুর গাছপালা থেকেও আয় হয়। নলবনে সিনেমা, সিরিয়ালের শ্যুটিং হয়। তার থেকেও সমবায়ের আয় আছে। সেই সব টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠছে। মৎস্যজীবীদের বেতনও ঠিক মতো দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
নলবন সমবায় সমিতির সভাপতি গোপাল হালদার বলেন, ‘‘জোর করে আমাদের কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা চাই, সমবায়ের মধ্যে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করতে।’’
এ ব্যাপারে এলাকার বিধায়ক সওকত বলেন, ‘‘আমার বিধানসভা এলাকার মধ্যে কোনও অনৈতিক কাজ মানব না। তবে ওই মৎস্যজীবীদের কোনও সমস্যা থাকলে আমাকে জানাতে পারতেন। আমি পাশে থেকে সমাধান করতাম। কিন্তু এই ভাবে অনশনে বসে ঠিক করেননি।’’
কী ভাবে সমস্যা মেটানো যায়, তা তিনি দেখছেন বলে জানিয়েছেন।