নোটের সঙ্কটে মাথায় হাত ফুল চাষিদের

গত বছরও একটি গোলাপ বিক্রি হয়েছিল তিন টাকায়। এ বার তার দর নেমে হয়েছে মাত্র ৫০ পয়সা। গাঁদা বিক্রি হয়েছিল ৩০ টাকা কে়জি দরে। এখন তা ৬-১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

ঠাকুরনগর শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১৭
Share:

ক্রেতা নেই। হতাশ ফুল বিক্রেতারা। —নিজস্ব চিত্র।

গত বছরও একটি গোলাপ বিক্রি হয়েছিল তিন টাকায়। এ বার তার দর নেমে হয়েছে মাত্র ৫০ পয়সা। গাঁদা বিক্রি হয়েছিল ৩০ টাকা কে়জি দরে। এখন তা ৬-১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

Advertisement

গাইঘাটার ঠাকুরনগর ফুলবাজারে এই দর হওয়াতে চিন্তায় ফুল চাষিরা। নোট বাতিলের প্রায় দেড়মাস পরেও টাকার সমস্যা মিটছে না। ফলে ফুলচাষি ও ফুল বিক্রেতাদের সমস্যা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। রোজ এই ফুলবাজারে উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তের চাষিরা ফুল বিক্রি করতে আসেন। বহু মানুষ এখান থেকে ফুল কিনে শহরে বিক্রি করেন। বনগাঁর বহু মানুষেরই প্রধান জীবিকা হল ফুল বিক্রি। মহকুমার অর্থনীতিও ওই ফুল চাষের উপর কিছুটা নির্ভর করে। কিন্তু নোট বাতিলের জেরে যেমন বিপাকে পড়েছেন ফুলচাষি তেমনই ফুল বিক্রেতারা।

গাইঘাটার গাজীপুরের বাসিন্দা সন্দীপ ঘোষ এ বার ১৫ কাটা জমিতে ফুল চাষ করেছিলেন। খেতের ফুল তুলে ঠাকুরনগর বাজারে আনছেন কিন্তু বিক্রি তেমন হচ্ছে না। সন্দীপবাবু জানান, নোট বাতিলের আগে এক কেজি গাঁদা ফুল বিক্রি করেছি ৫০ টাকা কিলোতে। কিন্তু এখন আর তা হচ্ছে না। এ ভাবে চাষের খরচও উঠছে না। নোট বাতিলের প্রভাবের কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে তাঁর দাবি। একই অবস্থা অন্য ফুলচাষিদেরও। তাঁদের কথায়, ‘‘নোট বাতিলের পর ওই সব এলাকায় মানুষের মধ্যে ফুলের চাহিদা কমেছে।’’ শিশির বিশ্বাস নামে এক ফুলের আওতদার বলেন, ‘‘কলকাতা-সহ বিভিন্ন বাজারে মানুষের মধ্যে ফুল কেনার চাহিদা কমে গিয়েছে। যিনি ১০০ টাকার ফুল নিতেন, তিনি নিচ্ছেন ২০ টাকার। খুচরো সমস্যার জন্যই এমনটা হচ্ছে।’’

Advertisement

ঠাকুরনগর ফুল বাজারে রোজ প্রায় আড়াই হাজার চাষি ফুল নিয়ে আসেন। প্রায় ১২ হাজার মানুষ তাঁদের কাছ থেকে ফুল কিনে বাইরে বিক্রি করেন। এঁদের বেশির ভাগই মহিলা ক্রেতা। তাঁদেরই একজন মীনারানি দে বলেন, ‘‘রোজ ২০ কিলো ফুল কিনে কলকাতায় নিয়ে যেতাম। এখন ৫-১০ কিলো ফুল নিয়ে যাচ্ছি। ঠিকমতো বিক্রি হয় না।’’ ঠাকুরনগর বাজারের দুই ফুল ব্যবসায়ী অরুণ বাছার এবং অমল বিশ্বাস জানান, চাষিদের কাছ থেকে ফুল কিনছি। বিক্রি না হওয়ায় তা পচে যাচ্ছে। ফুল সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। চাষিদের টাকা দিতেও সমস্যা পড়েছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন