অসুস্থ হয়ে পড়লেন এক বিক্ষোভকারী। ইনসেটে, দফতরের বাইরে মহকুমাশাসক। ছবি: নির্মল বসু
আইনজীবীদের বিক্ষোভ প্রশমিত করতে হিমসিম খাচ্ছে বসিরহাটের পুলিশ-প্রশাসন।
বুধবার বিক্ষোভের জেরে ঘণ্টা তিনেক নিজের দফতরের বাইরে ঠা ঠা রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হল মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালিকে। এসডিপিও আশিস মৌর্য বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদের মুখে পুলিশকেও পিছু হঠতে হয়।
এরই মধ্যে প্রচণ্ড গরমে বিক্ষোভকারী দুই আইনজীবী সাহিদ বারি এবং জিয়ারুল মোল্লা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সব মিলিয়ে সকাল ১০টা থেকে তুলকালাম চলে বসিরহাটে।
আইনজীবীদের বক্তব্য, গত কয়েক দিনে পাঁচ আইনজীবী নানা ভাবে নিগৃহীত হয়েছেন। মূল অপরাধীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে অবস্থান, ঘেরাও, বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলনে নেমেছেন আইনজীবী, মুহুরি, ল’ক্লার্করা।
এ দিন বিক্ষোভকারীরা বেলা ১০টা নাগাদ মহকুমাশাসকের দফতরে ঢোকার গেটের সামনে বেঞ্চ পেতে বসে পড়েন। মাইকে স্লোগান দেওয়া হতে থাকে। বেলা ১২টা নাগাদ নীতিশ তাঁর দফতরে ঢুকতে গেলে তাঁকে বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে পড়তে হয়। অনেক অনুরোধ-উপরোধেও কাজ হয়নি। অফিসে ঢুকতে পারেননি নীতেশ এবং দফতরের অন্য কর্মীরা।
মহকুমাশাসকের বক্তব্য, অপরাধীদের বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু এ কথাতে উত্তেজনা কমেনি। তার মধ্যে লাঠি-বন্দুক হাতে পুলিশ হাজির হওয়ায় উত্তেজনা আরও বাড়ে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিশ্বজিৎ রায়, অজয় বসু, অমিত মজুমদাররা বলেন, ‘‘আইনজীবীরা মার খাচ্ছেন। সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে মূল অপরাধীকে শনাক্ত করা সত্ত্বেও পুলিশ-প্রশাসন নির্বিকার। যতক্ষণ না মূল অপরাধী গ্রেফতার হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা আদালতে কর্মবিরতি জারি রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’
জেলার অন্য আদালতের আইনজীবীরাও প্রশাসনের এই ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্দোলনে নামছেন বলে দাবি বিক্ষোভকারীদের।
এসডিপিও বলেন, ‘‘আইনজীবী নিগ্রহে যুক্ত আটজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। বাকিদেরও খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।’’
গত সোমবার মনোনয়নের শেষ দিনে বসিরহাটের ফৌজদারি আদালতের প্রবীণ আইনজীবী সুব্রত সানাকে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে একদল লোক মারধর করে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এই ঘটনার আগে দুই আইনজীবী মহকুমাশাসকের দফতরের মধ্যে কয়েকজনের হাতে আক্রান্ত হন। এ ছাড়াও, কয়েক দিন আগে বসিরহাট আদালতের আরও দুই আইনজীবী ও মুহুরিকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।