ধৃতেরা: বনগাঁ থানায় আনা হল চারজনকে। নিজস্ব চিত্র
মুদ্রা বিনিময় ব্যবসায়ীর ৮ লক্ষ টাকা-ভর্তি ব্যাগ ছিনতাই করেছিল চার যুবক। বুধবার সন্ধ্যায় বনগাঁ স্টেশন রোডের ওই ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। দেখা যায়, দুষ্ক-দুষ্কৃতীরা এসেছিল একটি লাল রঙের মোটর বাইকে। দু’জনের মাথাতেই ছিল হেলমেট। বাইকের সামনে লাগানো ছিল নীল রঙের স্টিকার। সেটি ঝাপসা হওয়ায় বিশেষ কিছু অবশ্য বোঝা যায়নি। তবে ওই স্টিকারের সূত্রেই হল রহস্যভেদ। ধরা পড়েছে চারজন। নিজের টাকাও ফিরে পেয়েছেন ব্যবসায়ী টুটুল প্রামাণিক।
বনগাঁ থানার অ্যান্টি ক্রাইম টিম তদন্তের দায়িত্বে ছিল। শুক্রবার রাতভর বনগাঁ ও গাইঘাটার বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। চারজনকে তাদের বাড়ি থেকেই ধরা হয়। শনিবার দুপুরে থানায় আইসি সতীনাথ চট্টরাজ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে পুলিশ সকলকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম রাজা দেবনাথ, প্রীতম চৌধুরী, অভিজিৎ সাউ ও সৌরভ সাহা। বাড়ি বনগাঁর মতিগঞ্জ, বক্সিপল্লি, বসাকপাড়া ও গাইঘাটার মণ্ডলপাড়ায়। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা সকলেই ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রীতিমতো পরিকল্পনা করে, লাইনম্যান নিয়োগ করে ছিনতাইয়ের ছক কষা হয়েছিল।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার গেদে এলাকার বাসিন্দা টুটুল বনগাঁ শহরের বাটারমোড় এলাকায় মাঝে মধ্যে বাংলাদেশি টাকা ভাঙাতে আসতেন। সেটা নজরে পড়েছিল রাজা ও সৌরভের। তারা বাটারমোড় এলাকায় একটি চায়ের দোকানের পাশে আড্ডা দেয়। রাজা অতীতে গরু পাচার, ধুর পাচারে জড়িত ছিল। ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা আসে ওই দুই যুবকের মাথায়। তারা সঙ্গে নেয় অভিজিৎ ও প্রতীমকেও। ঠিক হয়, অভিজিৎ ও প্রতীম টুটুলের গতিবিধির উপরে নজর রাখবে। সেই খবর ফোনে পৌঁছে দেবে রাজা-সৌরভদের।
বুধবার সন্ধ্যায় টুটুল বাটারমোড় এলাকায় টাকা ভাঙাতে আসেন। সন্ধে সাড়ে ৭টার সময়ে বাটারমোড় থেকে একটি টোটোয় ওঠেন। খবর পৌঁছয় সৌরভ-রাজার কাছে। তারা বাইকে টোটোর পিছু নেয়। দু’জনের মাথায় হেলমেট ছিল। মুখ ছিল রুমালে বাঁধা। স্টেশন রোড ধরে টোটো যাওয়ার সময়ে পিছন থেকে হাত বাড়িয়ে রাজা টুটুলের ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। পাশের গলি ধরে গতি বাড়িয়ে পালায় বাইক।
টুটুল থানায় অভিযোগ করেন। অ্যান্টি ক্রাইম টিম খোঁজখবর করে দেখে, কাদের বাইকে নীল স্টিকার রয়েছে। সেই মতো কিছু বাইক সনাক্ত করা হয়। মালিকদের সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু হয়। কারও অপরাধের ইতিহাস আছে কিনা, তা জানতে গিয়ে সৌরভের হদিস মেলে। শুক্রবার তার উপরে নজর ছিল পুলিশের। রাতে তাকে বাড়ি থেকে ধরে জেরা করে বাকিদের সন্ধান মেলে।