সাধু বাড়ি। ডানদিকে অ্যালমুনিয়ামের দরজায় ভারি জিনিস দিয়ে পেটানোর দাগ। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ গেল হানাবাড়িতে। কিন্তু ‘ভূত’ ভ্যানিশ!
রাত ১২টা। কয়েকটি মোটরবাইক ও গাড়ি করে বারো জনের একটি দল নিয়ে বসিরহাটের আইসি দেবাশিস চক্রবর্তী পৌঁছলেন হানাবাড়িতে। টর্চ হাতে সোজা ঢুকে পড়েন বাড়ির ভিতর। পুরো বাড়ি তল্লাশি চালানোর পরে হঠাৎ চোখে পড়ে চিলেকোঠার ঘরের দিকে। দেখা গেল ওই ঘরের অ্যালমুনিয়ামের দরজাটির কিছু জায়গা তোবড়ানো।
বসিরহাটের নতুন বাজার এলাকার সাধু-বাড়িতে কয়েক বছরে তিন জনের অপমৃত্যু হয়েছে— এটা সবাই জানতেন। কিন্তু সপ্তাহখানেক ধরে ওই বাড়িতে নানারকমের আওয়াজ শোনায় বেজায় আতঙ্কে রয়েছেন সাধু-বাড়ির লোকজন। ভূতুড়ে শব্দের রহস্য ভেদ করতে সোমবার রাতে পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালায়। তবে যতক্ষণ পুলিশ ছিল ‘শব্দ ভূতের’ একটি আওয়াজও মেলেনি। পুলিশ জানিয়েছে, ভূতটুত কিছু নয়। এ সব মানুষের কাজ। আমরা থাকাকালীন কিছুই হয়নি। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘যেখানে ভূতের উপদ্রবের কথা শোনা যায় সেখানে কোনও না কোনও অপরাধমূলক কাজ হয়। এখানেও তাই হচ্ছে। তদন্ত চলছে। খুব শীঘ্রই সমাধান হবে।’’
এ দিন সাধু বাড়ি ঘুরে দেখেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের টাকি শাখার সম্পাদক পার্থ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এটি দুষ্কৃতীদের চক্রান্ত। আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে নানারকম শব্দ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ভাড়াটে বা মালিক উচ্ছেদের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’
এ দিন শুধু সাধুবাড়ি নয়। তল্লাশি চালানো হয় পাশের নাথ বাড়িতেও। সাধু বাড়ি ও নাথ বাড়ির ছাদটি জোড়া লাগানো। তবে পুলিশের হাজার ডাকেও রাতে ঘুম ভাঙেনি নাথেদের। পরে পুলিশ পাঁচিল বেয়ে উঠতে শুরু করলে ওই পরিবারের একজন এসে দরজা খুলে দেন। সারা পাড়া শব্দ ভূতের উপদ্রবের কথা জানলেও নাথ বাড়ির ক্ষীরোদ নাথ এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।