Geeta Path in Brigade Parade Ground

রবিবারের গীতাপাঠে থাকছেন দিলীপ-সুকান্ত-শমীক! ভোটমুখী পশ্চিমবঙ্গে শক্তিপ্রদর্শনে লক্ষ্য পাঁচ লক্ষের, তৈরি হচ্ছে ব্রিগেড

লোকসভা ভোটের আগে ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে ব্রিগেডে আয়োজন করা হয়েছিল লক্ষ কণ্ঠের গীতাপাঠের। দু’বছর পর আবার এক ডিসেম্বরে সেই ব্রিগেডেই আয়োজন হচ্ছে গীতাপাঠের। দায়িত্বে সেই ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৫
Share:

(বাঁ দিক থেকে) ব্রিগেডে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমজার, শমীক ভট্টাচার্য। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বছর দুই পর আবার কলকাতার ব্রিগেডে আয়োজিত হতে চলেছে গীতাপাঠ! এ বার আর লক্ষ কণ্ঠে নয়, দাবি পাঁচ লক্ষ জমায়েতের। সেই মতো তৈরি হচ্ছে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড। রবিবারের এই কর্মসূচিতে কারা উপস্থিত থাকবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। জানা গিয়েছে, একঝাঁক সাধুসন্ত তো থাকছেনই, সেই সঙ্গে থাকছেন রাজ্য বিজেপির প্রথম সারির নেতানেত্রীরা!

Advertisement

লোকসভা ভোটের আগে ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে ব্রিগেডে আয়োজন করা হয়েছিল লক্ষ কণ্ঠের গীতাপাঠের। দু’বছর পর আবার এক ডিসেম্বরে সেই ব্রিগেডেই আয়োজন হচ্ছে গীতাপাঠের। আয়োজনের দায়িত্বে সেই ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’। তবে নেপথ্যে থেকে বিজেপি নেতৃত্ব সমর্থন জোগাচ্ছেন, তা বলাই বাহুল্য। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই প্রথম এই কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, পাঁচ লক্ষ হিন্দু গীতাপাঠ করবেন ব্রিগেডে! রবিবারের কর্মসূচিতে তিনি উপস্থিত থাকবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে থাকছেন দিলীপ ঘোষ, রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারেরা।

দিলীপের উপস্থিতি নিয়েই জল্পনা ছিল বিজেপির অন্দরে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্য বিজেপির বড় কোনও কর্মসূচিতে সে ভাবে তাঁকে দেখা যায়নি। কিন্তু সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন রবিরারে কর্মসূচিতে থাকছেন। আনন্দবাজার ডট কম-কে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘আমি আমন্ত্রণ পেয়েছি। যাব। সকাল ৯টা নাগাদ ব্রিগেডে পৌঁছে যাব।’’ দিলীপের মতো সুকান্ত, শমীক এবং রাজ্যে অন্যান্য বিজেপি নেতানেত্রীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয় উদ্যোক্তাদের তরফে। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে রবিবার ব্রিগেডে থাকবেন তাঁরাও।

Advertisement

আয়োজকদের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে দু’জনের কেউই থাকছেন না রবিবারের কর্মসূচিতে। রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্যপাল বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন। রবিবারের মধ্যে তাঁর কলকাতায় ফেরার সম্ভাবনা নেই। মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন কি না, তা আনুষ্ঠানিক ভাবে জানা যায়নি। তবে সূত্রের খবর, গত বারের মতো এ বারও তিনি গীতাপাঠের কর্মসূচিতে থাকছেন না।

গীতাপাঠের কর্মসূচির জন্য তিনটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে ব্রিগেডে। মূল মঞ্চের দু’পাশে থাকবে দুই মঞ্চ। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে পরিচিত সাধুসন্তেরা থাকবেন মূল মঞ্চে। সেই মঞ্চ থেকেই হবে গীতাপাঠ। আর পাশের দুই মঞ্চে বসবেন এ রাজ্যের পরিচিত সাধুসন্তেরা। মূল মঞ্চের সামনে তৈরি করা হয়েছে একটি ছোট্ট মঞ্চ। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। গীতাপাঠ শুরুর আগে ওই মঞ্চ থেকে মোট তিনটি গানের মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হবে!

রবিবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রমাপদ পাল, জলধর মাহাতো-সহ শীর্ষ পদাধিকারীরা। মূল মঞ্চে থাকবেন প্রধান অতিথিরা। সেই তালিকায় রয়েছেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী স্বামী প্রদীপ্তানন্দ (কার্তিক মহারাজ), রিষড়া প্রেমমন্দিরের অধ্যক্ষ নির্গুণানন্দ ব্রহ্মচারী, জগৎবন্ধু আশ্রমের বন্ধুগৌরব দাস মহারাজ। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে অনেক সাধুসন্তকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রবিবারের গীতাপাঠের কর্মসূচিতে। তাঁদের মধ্যে উপস্থিত থাকতে পারেন স্বামী জ্ঞানানন্দ, রামদেব, বাগেশ্বর ধামের পীঠাধীশ্বর ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী, সাধ্বী ঋতাম্ভরা-সহ প্রমুখ।

পাঁচ লক্ষের দাবি করলেও নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে জমায়েতের আকার নিয়ে। ২০২৩ সালের ‘লক্ষ কণ্ঠে’র কথা বলা হয়েছিল। কর্মসূচি শেষে মঞ্চ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে, জমায়েতের পরিমাণ এক লক্ষ ৩৭ হাজার। কিন্তু সেই জমায়েত দাবি নিয়ে প্রশ্ন থেকে গিয়েছিল। জমায়েতের যা ছবি দেখা গিয়েছে, তাতে লক্ষাধিক উপস্থিতি নিয়ে সংশয় ছিল অনেকের মনে। সেখানে এ বার পাঁচ লক্ষ জমায়েতের কথা বলা হচ্ছে। সেই সংখ্যা কি আদৌ দেখা যাবে রবিবারের ব্রিগেডে? ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই জমায়েতই পরোক্ষ চ্যালেঞ্জ বিজেপির কাছে। শুভেন্দুর ঘোষণা মতো পাঁচ লক্ষ মানুষ আসবেন তো গীতাপাঠের কর্মসূচিতে? এটাই বিজেপির কাছে শক্তিপ্রদর্শনের এক সুযোগ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement