পণের দাবিতে নির্যাতনের নালিশ, মৃত্যু হল তরুণীর

সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা থানার বেলিয়াঘাটা ব্রিজ এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম পায়েল ঘোষ (২০)। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।   

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১০
Share:

পায়েল ঘোষ

পণের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরেই নির্যাতন চলছিল। অবশেষে শ্বশুরবাড়িতে মৃত্যু হল তরুণীর।

Advertisement

সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা থানার বেলিয়াঘাটা ব্রিজ এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম পায়েল ঘোষ (২০)। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মৃতের বাবা বিশ্বনাথ ঘোষ দেগঙ্গা থানায় মেয়ের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ির নামে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযুক্ত গ্রেফতার করেছে প্রসেনজিৎ ঘোষ, পবিত্র ঘোষ ও সোনালি ঘোষকে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে কী ভাবে পায়েলের মৃত্যু হল, তা সঠিক ভাবে বলা সম্ভব।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় ফাজিলপুর এলাকার বাসিন্দা পায়েলের সঙ্গে আড়াই বছর আগে বিয়ে হয়েছিল বেলিয়াঘাটার প্রসেনজিতের। বাপের বাড়ির লোকজনের দাবি, বিয়েতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি মতো, সাড়ে ৫ ভরি সোনার গয়না, স্কুটি, আলমারি-সহ নানা আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছিল।

বিশ্বনাথের তিন মেয়ের মধ্যে পায়েল বড়। তাঁর একটি ছোট কাপড়ের দোকান আছে। মেয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন বাবা। তাঁর কথায়, ‘‘বিয়ের পর থেকে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দিত। কখনও ১ লক্ষ, কখনও ৫০ হাজার টাকা দাবি করত। টাকা দিতে না পারায় মেয়েকে মারধর করত। কয়েকবার মেয়েকে বাড়িতে নিয়েও এসেছিলাম। বার কয়েক সালিশি বসেছিল। তাতেও অত্যাচার কমেনি।’’

আট মাসের মেয়ে আছে পায়েলের। মাস দেড়েক আগে তার অন্নপ্রাশন হয়। সেই অনুষ্ঠানে বিশ্বনাথ নাতনিকে সোনার দুল দিয়েছিলেন। অভিযোগ, কেন তাঁরা গলার হার দেননি, এই দাবি তুলে নতুন করে পায়েলের উপরে নির্যাতন করা হচ্ছিল।

বিশ্বনাথ জানান, প্রসেনজিৎ বিয়ের সময়ে জানিয়েছিল, সে ডাকবিভাগের কর্মী। সরকারি চাকুরে পাত্র পাওয়ায় বিয়েতে দেরি করেননি পায়েলের বাবা-মা। বিএ প্রথম বর্ষে পড়তে পড়তেই বিয়ে হয় তাঁর। পরে অবশ্য জানা যায়, প্রসেনজিতের চাকরি পাকা নয়। সে দফতরের অস্থায়ী কর্মী।

সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ এক মেয়ের শ্বশুরবাড়ির এক প্রতিবেশী ফোনে মেয়ের মৃত্যুসংবাদ দেন বিশ্বনাথকে। তাঁরা গিয়ে দেখেন, বারান্দার মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে মেয়ে। তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। নাতনি এখন তাঁদের কাছেই রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন