বছর তিরিশের মহিলা এইচআইভি পজিটিভ। সে কথা গ্রামে চাউর হয়ে যাওয়ায় পরিবারটি কার্যত একঘরে। শাশুড়িকে মন্দিরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পাড়া-পড়শিরা যাতায়াত বন্ধ করেছেন। শ্বশুর বাড়িতে ক্রমশ কোণঠাসা মহিলাও।
উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার গ্রামের এই ঘটনার কথা কানে উঠেছে প্রশাসনের। শুক্রবার এলাকায় যান বিডিও, বিএমওএইচ, পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধান-সহ অনেকে। গ্রামের লোকজনকে বোঝানো হয়েছে, এডস ছোঁয়াচে রোগ নয়। এক সঙ্গে ওঠাবসা করলে, এক থালায় খেলেও রোগ ছড়ায় না।
কিন্তু গাঁয়ের লোক কী ভাবে জানল মহিলার অসুস্থতার কথা?
পরিবার সূত্রে অনুমান, মাস কয়েক আগে গর্ভবতী হওয়ার পরে এলাকার এক যুবকের মাধ্যমে রক্ত পরীক্ষা করিয়েছিলেন ওই বধূ। সেই যুবক কোনও ভাবে বিষয়টি জেনে ফেলে। তারপরে লোকের মুখে মুখে ছড়ায়। বছর আড়াই আগে মহিলার বিয়ে হয়েছিল স্থানীয় যুবকের সঙ্গে। দু’জনেরই এটি দ্বিতীয় বিবাহ। মাস আড়াই আগে যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেন মহিলা। মহিলার স্বামী ভিনরাজ্যে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘‘বিয়ের আগে কিছু জানতাম না। কয়েক মাস আগে বাড়ি এসে স্ত্রীর চিকিৎসার নথিপত্র দেখে হঠাৎ বিষয়টি নজরে পড়ে। আরজিকরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই।’’ বধূর শাশুড়ির আক্ষেপ, ‘‘আমাদের সকলে অন্য চোখে দেখছে। কেউ বাড়িতে পা রাখছে না। মন্দিরে যেতে নিষেধ করেছে।’’ মহিলার স্বামী চান, বাড়িতে থাকুন স্ত্রী। কিন্তু তাঁর বিবাহিত জীবনের কী হবে, সে প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে বছর একত্রিশের যুবকের মনে।
কী বলছেন ওই বধূ? তাঁর কথায়, ‘‘আমি মেয়েদের নিয়ে স্বামীর ঘর করতে চাই। কিন্তু যেন একটু শান্তিতে থাকতে পারি।’’
বিডিও বলেন, ‘‘মহিলাকে আমরা বলে এসেছি, কোনও অসুবিধা হলেই যেন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’’