বৌমাকে খুনের নালিশ, গ্রেফতার হল শাশুড়ি

বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলে চাপ দেওয়া হত মহিলার উপর। টাকা না আনলে তাঁর উপর করা হত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। অবশেষে সেই মহিলাকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বাগদার দিয়ালদহ গ্রামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাগদা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০১:২১
Share:

মৃতা: তনয়া মণ্ডল

বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলে চাপ দেওয়া হত মহিলার উপর। টাকা না আনলে তাঁর উপর করা হত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। অবশেষে সেই মহিলাকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বাগদার দিয়ালদহ গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম তনয়া মণ্ডল (২৮)। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তরুণীর বাবার করা অভিযোগের ভিত্তিতে শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আট বছর আগে বাগদার আঁইশঘাটা গ্রামের বাসিন্দা পরেশ রায়ের মেয়ে তনয়ার সঙ্গে বাগদার দিয়ালদহ গ্রামের বাসিন্দা তাপস মণ্ডলের বিয়ে হয়। তাঁদের একটি ছ’বছরের ছেলে রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে টাকাপয়সা আনার জন্য তনয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করত তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তনয়ার বাবা বলেন, ‘‘বিয়ের সময় আমরা যথেষ্ট গয়নাগাঁটি ও দানসামগ্রী দিয়েছিলাম। তার পরও ওকে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য ওর শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়মিত চাপ দেওয়া হত। ওর উপর অত্যাচারও করা হত। শেষ পর্যন্ত মেয়েটাকে ওরা মেরেই ফেলল।’’

তাপস সেনাবাহিনীতে চাকরির সূত্রে জম্মুতে থাকে। সম্প্রতি কালীপুজোর সময়ে সে বাড়ি এসেছিল। শনিবার দুপুরে তনয়ার দেহ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রতিবেশীরা দেহ উদ্ধার করে বাগদা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

খবর পেয়ে তনয়ার বাপের বাড়ির লোকজন বাগদা হাসপাতালে পৌঁছন। তাঁদের দাবি, তনয়াকে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরেশ বলেন, ‘‘আমার নাতি অঙ্কিত জানিয়েছে, তার সামনেই মাকে মারধর করা হয়েছে। মেয়ের গায়ে আঘাতের চিহ্নও ছিল। ওকে মেরে ফেলে তার পর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তনয়ার এক আত্মীয় বলেন, ‘‘ওঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে আমাদের খবরও দেওয়া হয়নি। প্রতিবেশীরাই ফোন করে জানান। হাসপাতালে এসে তনয়াকে মৃত অবস্থায় দেখি। ওঁর শ্বশুরবাড়ির কেউ ছিল না। সবাই পালিয়েছে।’’

তনয়ার বাবা শনিবার রাতে বাগদা থানায় জামাই ও তার বাবা-মায়ের নামে মেয়েকে খুনের অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার সকালে বাগদা বাজার এলাকা থেকে তনয়ার শাশুড়ি লক্ষ্মী মণ্ডলকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এ দিন তাকে বনগাঁ আদালতে তোলা হলে বিচারক চোদ্দো দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তাপস ও তার বাবা কানুর খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন