রেশমা বিবি।
বিয়েতে দাবিমতো পণ দেওয়া সত্ত্বেও এক মহিলার উপরে শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচার বন্ধ হয়নি বলে আগে অভিযোগ উঠেছিল। এ বার সেই মহিলার মৃত্যুতে তাঁর স্বামী, শাশুড়ি-সহ চার জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উঠল।
শনিবার বিকেলে অশোকনগরের খোশদেলপুর এলাকার বাসিন্দা, রেশমা বিবি (২১) নামে ওই মহিলার দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় বারাসত জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে। দেহটি ময়না-তদন্তের পাঠায় পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, আশঙ্কাজনক অবস্থায় রেশমাকে প্রথমে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি পথেই মারা যাওয়ায় দেহটি বারাসত জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে রেখে পালিয়ে যান তাঁরা।
পুলিশ জানায়, ওই মহিলার স্বামী রাজু সাহাজি, শাশুড়ি সুফিয়া-সহ চার জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তেরা পলাতক। তাঁদের খোঁজ চলছে।
বছর দুয়েক আগে হাবরার হিরাপোল এলাকার বাসিন্দা, সব্জি ব্যবসায়ী আশরাফ আলি মণ্ডলের মেয়ে রেশমার সঙ্গে বিয়ে হয় খোশদেলপুরের রাজুর। রাজু ইমারতি সামগ্রীর ব্যবসা করেন। তাঁদের এক বছরের একটি ছেলে রয়েছে। অভিযোগ, বিয়েতে রাজুদের দাবিমতো আসরাফরা খাট, মোটরবাইক, গয়না, নগদ টাকা— সবই দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই সব জিনিসপত্র পছন্দ না-হওয়ায় রাজুদের ফের একটি খাট এবং সোনার নেকলেস দেন আশরাফ। তার পরেও চাহিদার শেষ ছিল না। এ জন্য রেশমাকে মারধরও করা হতো বলে অভিযোগ।
আশরাফ বলেন, ‘‘বিয়ের এক মাস পর থেকেই মেয়ের উপর নির্যাতন শুরু হয়। শ্বশুরবাড়িতে পান থেকে চুন খসলেই মেয়েকে মারধর করা হতো। ওঁদের চাহিদা দিনের পর দিন বাড়ছিল। বাড়িতে এসে রেশমা সে সব বলত।’’একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, খোশদেলপুরের কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, শনিবার দুপুরে নাতি খাট থেকে পড়ে যাওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেশমাকে এমন মারেন, যে তাঁর মৃত্যু হয়।