পুড়ছে স্ত্রী, বাঁচাতে গিয়ে হাবড়ায় অগ্নিদগ্ধ স্বামী

জ্বলতে থাকা স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হলেন স্বামী। শেষ পর্যন্ত স্ত্রীকে অবশ্য বাঁচানো যায়নি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বামী মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবড়া শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি

জ্বলতে থাকা স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হলেন স্বামী। শেষ পর্যন্ত স্ত্রীকে অবশ্য বাঁচানো যায়নি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বামী মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন হাসপাতালে।

Advertisement

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টেয় ঘটনাটি ঘটেছে হাবড়া থানার বাণীপুর পূর্বপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তরুণীর নাম মাম্পি দাস (২১)। জখম তাঁর স্বামী তন্ময়। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তন্ময় বারাসত জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ছ’য়েক আগে বাণীপুরের মাম্পির সঙ্গে বিয়ে হয় ওই এলাকারই বাসিন্দা তন্ময়ের।

মাম্পি তখন নবম শ্রেণিতে পড়তেন। তাঁদের ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তন্ময় ওড়িশায় ঠিকাদারের কাজ করেন। তাঁদের একটি শিশুকন্যা রয়েছে। স্বামীর বাইরে থেকে কাজ করায় মাম্পির আপত্তি ছিল। তন্ময়কে তিনি এলাকায় থেকে কাজ করতে অনুরোধ করেছিলেন। মঙ্গলবার সকালে তন্ময়ের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ফিরতে তাঁর দেরি হয়ে যায়। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ ঘরের মধ্যে হঠাৎই মাম্পি শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। তন্ময় স্ত্রীকে বাঁচাতে যান। পুড়ে যায় তাঁর হাত, বুক, মুখ। পরে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে বাড়ি-সংলগ্ন কচুবাগানে থাকা জলে গিয়ে ঝাঁপ দেন।

Advertisement

মাম্পির চিৎকারে পড়শিরা ততক্ষণে ছুটে এসেছেন। জল ঢেলে মাম্পির গায়ের আগুন নেভানো হয়। স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান পড়শিরা। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁদের বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠান। সেখানেই বুধবার সকালে মারা যান মাম্পি।

ভেঙে পড়েছেন মাম্পির মা মিঠু দে ও বাবা রাজু। মিঠু বলেন, ‘‘হাসপাতালে মেয়ে আমাকে বলেছে, ও চাইত, তন্ময় যাতে এলাকায় থেকে কাজ করে। অনেক দিন ধরেই কথাটা ও বলত। জামাইয়ের পক্ষে হয় তো তা সম্ভব হচ্ছিল না। এ জন্য জামাইকে ভয় দেখাতেই মেয়ে গায়ে আগুন ধরিয়েছিল। এতটা পুড়ে যাবে, ও বুঝতে পারেনি। এই মৃত্যুতে জামাইয়ের কোনও দোষ নেই। ও মেয়েকে বাঁচাতে গিয়েছিল বলে মেয়েও জানিয়ে গিয়েছে।’’ মাম্পির শাশুড়ি মিলি বলেন, ‘‘স্বামীর সঙ্গে বৌমার তো খুবই মিলমিশ ছিল। কেন যে এমন করতে গেল, কে জানে!’’

পুলিশ জানিয়েছে, বারাসত হাসপাতালে মাম্পির দেহ ময়নাতদন্ত হচ্ছে। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত করা হচ্ছে। থানায় অবশ্য পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন